বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একে করোনা তার ওপর কৃষ্ণ ছত্রাকের আক্রমণ নিয়ে এই মুহূর্তে নাজেহাল সরকার। ইতিমধ্যেই মহামারী আইনে এই ছত্রাককে বিশেষ রোগ হিসেবে ঘোষণা করেছে তেলেঙ্গানা সরকার। মহারাষ্ট্রের ইতিমধ্যেই এই রোগের শিকার হয়ে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৯০ জনের। রাজস্থানের ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণের শিকার প্রায় ১০০ জন মানুষ। এবার বাংলাতেও দেখা গেল মিউকর মাইকোসিস নামক এই ছত্রাকের সংক্রমণ। কলকাতাতেই ছত্রাকের সংক্রমণে মৃত্যু মৃত্যু হয়েছে এক ব্যক্তির। জানিয়ে এই মুহূর্তে যথেষ্ট চিন্তিত সরকার। ইতিমধ্যে কেন্দ্র সরকারের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে রাজ্য সরকার গুলিকে। জানানো হয়েছে এই রোগ কেউ এপিডেমিক রোগ হিসেবে চিহ্নিত করতে হবে। কেউ আক্রান্ত হলে সেই খবর জানাতে হবে কেন্দ্রকে।
এদিন কোভিড নিয়ে বিভিন্ন রাজ্যের দশ জন মুখ্যমন্ত্রী সহ বেশকিছু ডিএমের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷ এই বৈঠকে কৃষ্ণ ছত্রাক প্রসঙ্গে আলোচনা করবেন ভেবেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানান, “করোনার সঙ্গে এখন ব্ল্যাক ফাঙ্গাস হচ্ছে। আমি যা ভাবলাম জানতে চাইবো এর চিকিৎসা কি? গাইড লাইন কি? ওষুধপত্রের যোগান কিভাবে দেওয়া হবে? কিছুই বলতে দেওয়া হলো না।” প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা না করতে পারলেও ইতিমধ্যে কৃষ্ণ ছত্রাক নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার।
রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় বসু জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রতিনিধিরা। তবে আশঙ্কার কোন কারণ নেই, মিউকর মাইকোসিস বা কৃষ্ণ ছত্রাকের ওষুধ অ্যাম্ফোটেরাইসিন রাজ্যের কাছে যথেষ্ট পরিমাণে মজুত রয়েছে। এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা হবে না। তবে এই বিষয়ে অসচেতনতার কোন জায়গা নেই বলেই জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা। তিনি বলেন, ইতিমধ্যেই জেলা গুলিকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের যে কোন জেলায় কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে তা স্বাস্থ্য ভবনকে জানাতে হবে।
অন্যদিকে কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্য সরকারকে দেওয়া চিঠিতে আরও জানানো হয়েছে, যে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে তা মেনে চলতে হবে যে কোনো সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতালকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এই কৃষ্ণ ছত্রাকের সবথেকে বেশি সংক্রমণ হয়েছে মহারাষ্ট্রে। ইতিমধ্যেই আক্রান্ত প্রায় ১৫০০ মানুষ। করোনার মতোই এই রোগের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা ওয়ার্ড। রোগীদের জন্য পৃথক ওয়ার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে রাজস্থানেও। পশ্চিমবঙ্গেও করোনার সংক্রমণ যথেষ্ট পরিমাণে বেশি। আর কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি মারাত্মক হয়ে উঠছে এই মিউকর মাইকোসিস। তাই সচেতন থাকা একান্ত বাঞ্ছনীয়। কোন ধরনের লক্ষণ চোখে পড়লে সাথে সাথেই ইএনটি চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। নিজে থেকে কোনো রকম ঘরোয়া চিকিৎসা করতে যাবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে।