খোদ কলকাতায় ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত আরো এক রোগী, বাড়ছে উদ্বেগ

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একদিকে যখন করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সুনামিতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে বাংলা, তখনই অন্যদিকে দোসর হয়ে আতঙ্কের পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে কৃষ্ণ ছত্রাক। ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে এর প্রকোপ বেড়ে গিয়েছে যথেষ্ট বেশি। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পনেরোশো মানুষ। মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন একশোরও বেশি। অন্যদিকে রাজস্থানের শতাধিক ব্যক্তি আক্রান্ত হয়েছেন এই মারণ ছত্রাকে। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে গাইডলাইন দিয়েছে এইমস। অন্যদিকে তেলেঙ্গানার মতো বেশ কিছু রাজ্যে মহামারী আইন অনুসারে বিশেষ রোগ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে এই রোগকে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকও জানিয়েছে করোনা আক্রান্তের মতই, এখন থেকে কৃষ্ণ ছত্রাকে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও তালিকা পাঠাতে হবে রাজ্যগুলিকে।

এরইমধ্যে এর একবার আতঙ্ক বাড়লো পশ্চিমবঙ্গে। খোদ কলকাতাতেই আরো এক রোগীর শরীরে মিলল কৃষ্ণ ছত্রাকের সংক্রমণ। এই নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে মোট সংখ্যা দাঁড়ালো ১০ জন। জানা গিয়েছে, বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ঐ রোগী। সম্প্রতি কোভিডের সংক্রমণ থেকে সেরেও উঠেছিলেন তিনি। কিন্তু হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়ার আগেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই ব্যাক্তি। হলে চিকিৎসকরা তিনি মিউকর মাইকোসিসের সংক্রমণে আক্রান্ত কিনা, তা খতিয়ে দেখেন। এর পরেই ধরা পড়ে কৃষ্ণ ছত্রাকের সংক্রমণ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই ওই রোগীর চিকিৎসা শুরু করেছেন তারা। কিছুদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।

এর আগেই রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিটির একটি বৈঠকে জানা গিয়েছিল মিউকর মাইকোসিস রোগের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ রাজ্যে যথেষ্ট পরিমাণে মজুদ রয়েছে। তবে রোগীদের তাড়াতাড়ি চিকিৎসার একান্ত প্রয়োজন। তাই কোনরকম অবহেলা এবং ঘরোয়া চিকিৎসা একদমই উচিত নয়। বিশেষত করোনা সেরে যাওয়ার পরেও যদি মাথার যন্ত্রণা না কমে, দৃষ্টির সমস্যা দেখা দেয় কিম্বা চোখের চারপাশে ব্যথা হওয়া, মুখের চারপাশ ফুলে যাওয়া, দাঁত আলগা হয়ে আসা এই ধরনের কোন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে দ্রুত ইএনটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য মিউকর মাইকোসিস সংক্রমণের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই নাক বুজে যায়, খাবারের স্বাদ গন্ধ পাওয়া যায় না অথবা নাক দিয়ে কালো তরল কিম্বা রক্ত বের হতে শুরু করে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, এ ধরনের কোন উপসর্গ থাকলে ভয় পাবেন না। এই রোগে মৃত্যুর হার বেশি হলেও ঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু হলে সেরে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই সতর্ক থাকুন, বিশেষত ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী, হাই সুগারের রোগীদের ক্ষেত্রে, কিংবা অক্সিজেনের সাপোর্টের কারণে তারা দীর্ঘদিন ভেন্টিলেশনে রয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে এ ধরনের রোগের সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট বেশি। তাই এক্ষেত্রে কোন আত্মীয়ের এ ধরনের উপসর্গ থাকলে তখনই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর