পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গন্ডগ্রামের বাসিন্দা বুদ্ধদেব জানা। ছোট থেকেই তিনি চোখে কম দেখতেন তাই প্রথাগত স্কুল ছেড়ে তাকে ভর্তি হতে হয় অন্ধদের স্কুলে। সেখানে শুরু করেন তিনি তার শিক্ষাজীবন। পড়াশোনার পাশাপাশি ছোট থেকেই তার খেলাধুলায় ছিল অসাধারণ প্রতিভা। আর সেই অসাধারণ প্রতিভা থাকার কারণেই সেদিনের সেই বুদ্ধদেব আজকে বিশ্বের কাছে তুলে ধরছেন ভারতবর্ষকে।
তৃতীয় শ্রেণি থেকে তিনি চলে যান নরেন্দ্রপুর স্কুলে সেখানেই বেড়ে ওঠেন এবং পড়াশোনা শুরু করেন। আজ এই বুদ্ধদেব দ্বাদশ শ্রেণীর কলা বিভাগের একজন ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ছোট থেকেই সাঁতারে পারদর্শী ছিলেন, এমনকি জাতীয় স্তরে সাঁতারের জন্য তার রয়েছে ছয় টি স্বর্ণপদক। কিন্তু সাঁতারের পাশাপাশি বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করা যায় জুডোতে অসাধারণ পারদর্শিতার হয়েছে বুদ্ধদেবের। এমনকি কিছুদিন আগে গোরক্ষপুর গিয়ে জাতীয় প্যারা গেমসে সোনা জিতেছেন এই মেদিনীপুরের বুদ্ধদেব।
আর তারপরেই কৃষক পরিবারের এই অন্ধ ছেলের জীবনের লক্ষ্য ঘুরে যায়। জুডোতে দেশের জন্য কিছু করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বুদ্ধদেব জানা। আর এবার বুদ্ধদেবের সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। আগামী বুধবার থেকে ইংল্যান্ডের বার্মিংহামে আসর বসতে চলেছে প্যারা কমনওয়েলথ গেমসের, আর সেখানেই বুদ্ধদেব অংশ গ্রহণ করবেন 60 কেজির নিচে জুডোতে। আর বুদ্ধদেব জানাই প্রথম যিনি প্রথম ভারতীয় অন্ধছাত্র হিসাবে প্যারা কমনওয়েলথে ভারতের হয়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবেন।
এই ব্যাপারে বুদ্ধদেব কে জিজ্ঞাসা করা হলে উনি জানান একজন অন্ধ হয়ে আমার এই যাত্রাপথে মোটেও সহজ ছিল না। কিন্তু কোচ দিব্যেন্দু হাটুয়া এবং মিশনের অন্যান্যরা আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছেন আর তাদের সাহায্য নিয়েই আমি আজ এই জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছি। উল্লেখ্য কোচ দিব্যেন্দু হাটুয়া বুদ্ধদেবকে জুডো শেখানো জন্য কোনোরকম অর্থ নেয় নি।