বাংলাহান্ট ডেস্ক : অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ (Bangladesh)। আর্থিক সংকটে এমনিতেই বিপর্যস্ত অবস্থা পদ্মাপাড়ের দেশের। এর মধ্যেই, গত শুক্রবার বিভিন্ন জ্বালানি তেলের দাম প্রায় ৫০ শতাংশ বাড়িয়েছে হাসিনা সরকার। তারপর থেকেই বাংলাদেশে একের পর এক বিক্ষোভ সমাবেশ চলছে। বিরোধী দল বিএনপি এই পরিস্থিতিতে নতুন করে লড়াইয়ে নেমেছে। বৃহস্পতিবার বিএনপি (BNP) ঢাকার নয়া পল্টনে যে সমাবেশের ডাক দেয় তা অনেকাংশেই সফল।
সমাবেশে লোক সমাগম ছিল চোখে পড়ার মতো। কার্যত গোটা রাজধানী শহরই অচল হয়ে পড়ে জনতার ঢেউয়ে। বিএনপি নেতারা দাবি করেন, দেশের মানুষকে চরম কষ্টে ফেলে আওয়ামী লীগের ( Awami League) নেতারা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা লুটপাট ও পাচার করছেন। অবিলম্বে হাসিনা সরকারের ইস্তফা দাবি করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির। তিনি বলেন, ‘আপনারা মানুষের সমস্যা সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সুতরাং আপনাদের এই মুহূর্তে পদত্যাগ করে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ একটি সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচনের মাধ্যমে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নতুন পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে, নতুন সরকার গঠন করতে হবে। বিএনপি এটা করিয়েই ছাড়বে।’
বিরোধী দলের শক্তি বৃদ্ধি হচ্ছে বুঝেই সাবধান আওয়ামী লীগ। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ দিন বলেন, ‘অগস্ট মাস শোকের মাস। এই মাসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। অগস্টে তাই আমরা রাজপথে নামি না। তবে সেই সুযোগ নিয়ে বিরোধীরা যদি আমাদের হুমকি-ধমকি দিতে শুরু করেন, তবে আমরাও রাজপথে নামতে পিছ-পা হবো না। ভুলে যাবেন না, আওয়ামী লীগ কিন্তু রাজপথ থেকেই ক্ষমতায় দখল করেছে।’
শাসক জোট ‘১৪ দল’-এ আওয়ামী লীগের শরিক দলগুলিও দাবি করছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা করা হয়নি। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সরকারি সিদ্ধান্ত সবসময় সবাইকে বলে নেওয়া সম্ভব হয় না। জ্বালানি তেল দফতর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেই। দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত তিনিই নিয়েছেন’। কাদের আরও বলেন, ‘শরিকরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করবেন ভাবলে করতে পারেন।’
এ দিন বেলা ২টোয় বিএনপি সভা ডাকে। কিন্তু দেখা যায় তার আগে থেকেই হাজার হাজার মানুষ সভাস্থল ভরিয়ে তোলেন। আশপাশের রাস্তাও ভিড়ে অচল হয়ে পড়ে। এর আগে তাদের বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে গত বছরের ২০ নভেম্বরে শেষবার সমাবেশ করে বিএনপি। তার পর থেকে তাদের আর আন্দোলনে দেখা যায়নি। এ দিনের সভার ভিড় আগের সমাবেশকে ছাপিয়ে যায়।
সোমবার বিএনপির যুব সংগঠন একই জায়গায় যে সভা করে, তাতেও লোক হয়েছিল নেতাদের প্রত্যাশা ছাপিয়েই। এ দিনের ভিড়ে দেখে উৎসাহী হয়ে ওঠে বিএনপি নেতৃত্ব। সরকারের ইস্তফা চেয়ে ২২ আগস্ট থেকে জেলা স্তরে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘এই আগস্টে এরাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল। অগস্ট এলেই এদের উল্লাস শুরু হয়। এ বারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’ কাদের দাবি করেন, নির্দিষ্ট সময়েই নির্বাচন হবে। তার আগে এই সরকার কোনও ভাবেই ইস্তফা দেবে না।