বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি, সিবিআইয়ের (CBI) হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) নেতা অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mondal)। বর্তমানে এ ঘটনা নিয়ে তোলপাড় বঙ্গ রাজনীতি। এর মাঝেই আবার অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে বোলপুর হাসপাতালের চিকিৎসক পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেঁধেছে বিতর্ক। একটি সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক কিভাবে কোনো নেতার বাড়িতে পৌঁছে যেতে পারেন, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে বিরোধী দলগুলি। এর মাঝে অবশেষে মুখ খুললেন হাসপাতালে সুপার বুদ্ধদেব মুর্মু। এদিন একের পর এক বিস্ফোরক দাবি করলেন তিনি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি সিবিআইয়ের দশম তলব মাঝে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে সরকারি চিকিৎসকের পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক ছড়ায় সর্বত্র। তৃণমূল নেতার বাড়িতে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক পৌঁছে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসক দলকে কটাক্ষ ছুড়ে দেয় সকলে। এর মাঝেই অনুব্রতর বাড়িতে যাওয়া চিকিৎসক চন্দ্রনাথ অধিকারী একের পর এক বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন। তিনি জানান, “বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সুপারের নির্দেশেই আমাকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যেতে হয়। প্রথমে যেতে না চাইলেও পরবর্তীতে বাধ্য হই। এরপর অনুব্রত মণ্ডলের অনুরোধে সাদা কাগজে ১৪ দিনের ‘বেড রেস্ট’ লিখে দিই।”
চন্দ্রনাথবাবুর এহেন মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে গোটা বাংলায়। পরবর্তীতে অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারির পর ওই চিকিৎসকের বাড়িতে পৌঁছে যায় সিবিআই। সূত্রের খবর, গতকাল প্রায় তিন ঘন্টা ধরে জেরার মাধ্যমে হাসপাতাল সুপারের সঙ্গে কথোপকথনের পাশাপাশি অন্যান্য একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে যে সুপারের বিরুদ্ধে বর্তমানে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে, অবশেষে মুখ খুললেন তিনি।
গোটা ঘটনা প্রসঙ্গে বুদ্ধদেব মুর্মুর দাবি, “আমি চন্দ্রনাথ অধিকারীকে অনুব্রত মণ্ডলের বাড়িতে যেতে অনুরোধ করেছিলাম। এক্ষেত্রে ছুটিতে থাকার কারণেই তাঁকে বলা হয়েছিল। এক্ষেত্রে যদি তাঁর ইচ্ছা না হতো, তাহলে নাও যেতে পারতেন। চাপ দেওয়ার কোনো প্রশ্ন আসে না।” তিনি আরো জানান, “চন্দ্রনাথ অধিকারী ছুটিতে ছিলেন, সেই কারণেই ওকে সাদা কাগজে প্রেসক্রিপশন লিখতে বলা হয়েছে।” এছাড়াও এদিন তিনি তৃণমূল বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, “বিকাশবাবুর নির্দেশেই আমি অনুব্রতর বাড়িতে চিকিৎসক পাঠিয়েছিলাম।”
সূত্রের খবর, অনুব্রত মণ্ডল মামলায় ইতিমধ্যেই বুদ্ধদেব মুর্মুকে তলব করেছে সিবিআই। যেভাবে তৃণমূল নেতার বাড়িতে যাওয়ার জন্য সম্পূর্ণ দোষই বুদ্ধদেববাবুর ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন চন্দ্রনাথ অধিকারী, তারপর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে তদন্তকে অগ্রসর করতে চাইছে সিবিআই। তবে এদিন বুদ্ধদেব মুর্মুর মন্তব্যের পর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরবর্তী পদক্ষেপ কি হয়, সেদিকে তাকিয়ে সকলে।