বাংলাহান্ট ডেস্ক : আবারও বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল মালদহ। বোমার আঘাতে গুরুতর জখম এক নয় বছরের শিশুকন্যা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তার। মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের রতুয়া থানার অন্তর্গত চাঁদমনি ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌরীপুর গ্রামে। ঘটনার জেরে তীব্র চাঞ্চল্য এবং আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।
পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার দুপুরে হঠাৎই কান ফাটানো শব্দে কেঁপে ওঠে চারিদিক। সেই সময় শিশুটি নিজের বাড়ি থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরের ভুট্টা ক্ষেতে ঘাস আনতে গিয়েছিল। ঘাস নিয়ে ফিরে এসেই ভাত খাবে বলে গেছিল সে। কিন্তু বাড়ি ফিরে এদিন আর ভাত খাওয়া হল না তার। ওই শব্দ পেয়েই ছুটে যান পরিবারের সদস্যরা। গিয়ে দেখা যায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রয়েছে ওই শিশুকন্যা। রক্তে ভেসে যাচ্ছে চারিদিক। বোমা ফেটেই সে আহত হয়েছে বলে দাবি পরিবারের সদস্যদের।
গুরুতর আহত অবস্থাতেই তাকে কোনও ক্রমে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় সামসি গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকায় শিশুটিকে স্থানান্তরিত করা হয় মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ঘটনার তদন্ত করছে রতুয়া থানার পুলিশ। গ্রামের মধ্যের ভুট্টাক্ষেতে কোথা থেকে এল বোমা খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা।
উল্লেখ্য, মাত্র ৩ দিন আগেই মালদহতেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয় বছর চারেকের এক শিশুর। কালিয়াচক থানার নয়াগ্রাম এলাকার বাসিন্দা ছিল সে। শনিবার সকাল নাগাদ রান্নার কাজ কর্ম চলছিল বাড়িতে। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন জনা ছয়েক বাসিন্দা। রান্না করতে করতে হঠাৎ সেখান থেকে অন্য কোনও দরকারে উঠে বাইরে যান এক মহিলা। সেই সময় সেখানে ছিল বছর চারেকের পারভেজ আক্তার। ঠিক তখনই জোরালো বিস্ফোরণ ঘটে বাড়িতে। বিস্ফোরণের ফলে মাথায় আঘাত লাগে তার। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যায় ছোট্ট পারভেজ।
বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে ভেঙে পড়ে বাড়ির পাকা ছাদের একাংশও। রীতিমতো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় বাড়িটি। পরিবার সূত্রে দাবি, রান্নার গ্যাসের সিলিণ্ডার ফেটেই এই বিস্ফোরণ ঘটে। তবে তা খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে। গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের অভিঘাতে এত মারাত্মক প্রভাব হওয়া সম্ভব কি না, তাই নিয়েই ওঠে প্রশ্ন। তদন্তকারী আধিকারিকদের দাবি, বোমা বিস্ফোরণেই মৃত্যু হয় শিশুটির।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, একাধিকবার বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় শিরোনামে উঠে আসছে মালদহ জেলার নাম। উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশিরভাগ সময়ই বোমাগুলি পাওয়া যাচ্ছে গ্রাম বা জনবসতির অত্যন্ত কাছেই। আর এই ঘটনাগুলি থেকেই পর্যবেক্ষকদের দাবি, কার্যতই বারুদের স্তুপে পরিণত হয়েছে মালদহ। কিন্তু এতবার বোমাবিস্ফোরণ এবং রক্তপাতের পরও কেন সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে না সেই জেলার পুলিশ, কীভাবে কার্যতই যত্রতত্র খোলামকুচির মতন পড়ে থাকা সম্ভব প্রাণঘাতী বোমা? কোথায় বা দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা? বারবার উঠছে প্রশ্ন।