বাংলাহান্ট ডেস্ক: চিকিৎসক ও জীবনসঙ্গী- এই দুই ধরনের মানুষকে সব চেয়ে বেশি ভরসা করে থাকেন যে কোনও মানুষ। কিন্তু এই দুই মানুষই যদি বিশ্বাস ভাঙেন, তাহলে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়তে পারেন মানুষ। চিকিৎসককে ভরসা করেন বলেই তাঁর কাছে নিজের সমস্ত সমস্যার কথা খুলে বলতে পারেন লোকজন। কিন্তু বিহারের মুজফফরপুরের এক চিকিৎসক টাকার লোভে এমন এক কাণ্ড ঘটালেন, যার ফলে রোগীর প্রাণ সংশয় অবধি হতে পারে।
চিকিৎসার নামে এক মহিলার দু’টি কিডনিই চুরি করে নিয়েছেন এক চিকিৎসক। বিনা কিডনিতে কীভাবে বাকি জীবন বাঁচবেন, তা নিয়ে খুবই চিন্তিত তিনি। জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচার করাতে ওই হাসপাতালে গিয়েছিলেন সুনীতা। জরায়ুর সমস্যায় ভুগছিলেন অনেকদিন ধরেই। তাই চিকিৎসকের কথামতো অস্ত্রোপচার করাতে মুজফফরপুরের এসকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়েছিলেন। সেখানে অস্ত্রোপচার করার জন্য তাঁকে অজ্ঞান করা হয়।
কিন্তু জ্ঞান ফেরার সুনীতা পর বুঝতে পারেন, তাঁর দু’টি কিডনিই চুরি গিয়েছে! শুধু তাই নয়, তিন সন্তানের জননী সুনীতাকে এই অবস্থায় রেখে পালিয়ে গিয়েছে তাঁর স্বামীও। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কিডনি চুরির অভিযোগ করেছেন তিনি। শরীরে একটিও কিডনি না থাকার ফলে ডায়ালিসিস চলছে সুনীতার। একজন সুস্থ সবল মহিলার জীবনে এর ফলে নেমে এসেছে অন্ধকার।
এ বিষয়ে এসকে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মুখ্য চিকিৎসক বিকাশ কুমার জানিয়েছেন, ওই মহিলাকে ডায়ালিসিস দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কিডনি খুঁজে পাওয়া গেলে সেগুলি তাঁর দেহে ফের প্রতিস্থাপিত করা হবে। তবে ডায়ালিসিসের দ্বারা তিনি কতদিন বাঁচবেন, তা বলা যাচ্ছে না। ডঃ বিকাশ কুমার বলেন, “সুনীতা জরায়ুর অস্ত্রোপচার করাতে কোনও নার্সিং হোমে গিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় চিকিৎসকের হাতে জরায়ু সমেত কিডনিও বেরিয়ে আসে। এরপর তিনি নানা জায়গায় গিয়েছিলেন। অবশেষে আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাঁর।”
সুনীতার সঙ্গে এই দুর্ঘটনা ঘটার সময় তাঁর স্বামী তাঁর সঙ্গেই ছিলেন। স্ত্রীয়ের এই অবস্থা দেখে নিজের কিডনি দেওয়ার কথাও বলেন। তবে স্ত্রীয়ের সঙ্গে তাঁর কিডনি মেলেনি। এদিকে, স্বামী-স্ত্রীয়ের মধ্যে কোনও কারণে কথা কাটাকাটি হয়। সেই সময়েই তিনি সুনীতা ও তিন সন্তানকে সেখানে রেখে কোথাও চলে যান। এর আগে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে সন্তানদের দেখাশোনা করছিলেন সুনীতা। কিন্তু বর্তমান শারীরিক অবস্থার ফলে সেটিও করতে পারবেন না তিনি।