বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগে দুর্নীতি (Recruitment Scam) ইস্যুতে ধুন্ধুমার দশা রাজ্যে। শিক্ষক কেলেঙ্কারি নিয়ে শোরগোল শুরু হওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম বাম (CPM) আমলে ‘চিরকুট’ দিয়ে নিয়োগের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন। পাল্টা অভিযোগ করে পুরনো ফাইল খোলা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি। এবার সেই পথেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। ১৯৯৭ সালে এসএসসি-র (SSC) শুরু থেকে নিয়ে বামেদের আমলে যত চাকরি হয়েছে, তার কত চাকরি স্রেফ চিরকুট সুপারিশে হয়েছে তার খোঁজ নিয়ে দলীয় স্তরে তালিকা তৈরির নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী।
ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘আমাদের শিক্ষা সেল এবং কাউন্সিলরদের বলেছি, ১৯৯৭ সাল, যখন থেকে এসএসসি (SSC) শুরু হয়েছে, সেই সময় একটি নির্দিষ্ট দলের ‘সর্বক্ষণের কর্মী’দের মধ্যে কারা কারা চাকরি পেয়েছেন, তার একটা তালিকা তৈরি করতে। তার শ্বেতপত্র আমরা প্রকাশ করব।’’ পাশাপাশি বাম আমলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, লোকাল কমিটি বা জোনাল কমিটির ঘনিষ্ঠ থেকে পার্টির হোল টাইমারদের মধ্যে কতজনের পরিবারের সদস্যদের স্কুলে চাকরি হয়েছে, তার তালিকা তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
বিগত কিছুমাস ধরে নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছে শাসকদলের বহু নেতা-মন্ত্রীর। দুর্নীতির অভিযোগে জেলবন্দি রাজ্যে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কেলেঙ্কারি ইস্যুতে পরপর শাসকদলের সদস্যদের যোগ খুঁজে পাওয়ায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলগুলি। তবে তৃণমূলের অভিযোগ, দুর্নীতিতে কারও নাম জড়ালেই তার সঙ্গে গোটা দলকে দুর্নীতিগ্রস্তর তকমা দেওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার এই প্রসঙ্গেই বাম আমলে নানা সময় নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠে এসেছে সেই বিষয়ে মন্তব্য করেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, “চিরকুট সিস্টেমের নাম শুনেছেন? এটা আমাদের রাজ্যে বরাবরই ছিল। এখন প্রযুক্তি থাকার কারণে বিষয়টা এত খোলাখুলি হয়েছে আমাদের সময় একটা নির্দিষ্ট ছাত্র সংগঠন না করলে স্কুলে চাকরি পাওয়া যেত না।”
এরপরেই নিজের চাকরির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি সৌভাগ্যবশত এমএ পাস করে নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে চাকরি পেয়েছিলাম। আমার অনেক বন্ধু আছেন, বহু পরিচিত আছেন যারা ছাত্র সংগঠন করতেন। সে সময় একটি নির্দিষ্ট দলের কাউন্সিলর বা চেয়ারম্যানের আত্মীয় কিংবা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির আত্মীয় বা লোকাল কমিটি বা জোনাল কমিটির সঙ্গে পরিচিত, একাধিক হোলটাইমারের বাড়ির লোকেরা স্কুলের চাকরি পেয়েছেন।” এবার এই নিয়েই তাদের নামের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।