বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পরনে ধুতি, পাঞ্জাবি, চোখে কালো ফ্রেমের চশমা। এভাবেই তাঁকে দেখতে অভ্যস্ত ছিল আপামর বাঙালি। গতকাল না ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন সেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য (Buddhadeb Bhattacharjee)। তিনি চাইতেন, মৃত্যুর পর তাঁর দেহ, প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মানুষের কাজে আসুক। এবার তাঁর কর্নিয়ায় দৃষ্টি ফিরে পেলেন দুই ব্যক্তি।
বুদ্ধবাবুর (Buddhadeb Bhattacharjee) কর্নিয়ায় চোখের আলো ফিরে পেলেন দু’জন
গতকাল সকাল ৮টা ২০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বুদ্ধবাবু (Buddhadeb Bhattacharjee)। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। শোকের মধ্যেও কর্তব্যে অবিচল ছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পরিবার। ফোন যায় সংশ্লিষ্ট দেহদানে অঙ্গীকারবদ্ধ সংস্থার কাছে। এরপর তাঁর বাড়ি এসে কর্নিয়া সংরক্ষণ করেন চিকিৎসকরা। এবার তাঁর চোখের দুই কর্নিয়াই সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হল দু’জনের চোখে।
শহর কলকাতার রিজিওন্যাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি সূত্রে খবর, বুদ্ধবাবুর কর্নিয়া (Cornea) যে দুই ব্যক্তির চোখে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে, তাঁরা কর্নিয়া জনিত কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর কর্নিয়া সংরক্ষণের পর জরুরি ভিত্তিতে ওই দুই ব্যক্তির অস্ত্রোপচার করা হয়। দু’জনেই এখন স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
আরও পড়ুনঃ ২০ লক্ষের ঘুষ! ED আধিকারিকের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ, গ্রেফতার করল CBI
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বরাবরই চোখের সমস্যায় ভুগতেন বলে খবর। শেষ কয়েক বছরে দৃষ্টিশক্তি অনেকটাই কমে গিয়েছিল। যে কারণে তাঁকে পড়ে শোনাতে হতো। রিজিওন্যাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি সূত্রে জানা যাচ্ছে, বুদ্ধবাবুর রেটিনার সমস্যা থাকলেও তাঁর কর্নিয়া ঠিক ছিল। ছানি অপারেশন না করানোর দরুন তাঁর কর্নিয়ার গুণগত মানও বেশ ভালো ছিল। এবার তাঁর দুই কর্নিয়াই দুই ব্যক্তির চোখে প্রতিস্থাপন করা হল।
এদিন সকালে পিস ওয়ার্ল্ড থেকে বের করার পর বিধানসভায় নিয়ে যাওয়া হয় বুদ্ধদেববাবুর (Buddhadeb Bhattacharjee) নিথর দেন। প্রায় সাড়ে এগারোটা অবধি সেখানে থাকার পর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর নশ্বর দেহ নিয়ে শববাহী গাড়ি রওনা দেয় আলিমুদ্দিনের উদ্দেশে। সেখানে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সিপিএমের নেতা কর্মী থেকে শুরু করে রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, কংগ্রেসের বহু নেতা। বিকেল ৩টে অবধি সেখানেই মরদেহ শায়িত থাকবে বলে খবর।