মোদী সরকারের পদ্মভূষণ সম্মান প্রত্যাখ্যান করে দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে কেন্দ্রীয় সরকার এবারের পদ্ম পুরস্কারের তালিকা ঘোষণা করেছে। ভারত সরকারের তরফ থেকে উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিং এবং দেশের প্রথম চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল বিপিন রাওয়াতকে মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এ বছর সারাদেশ থেকে ১২৮ জনকে পদ্ম পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন বাংলার প্রাক্তন এবং ব্রামফ্রন্ট আমলের শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য।

প্রজাতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যর নাম পদ্ম পুরস্কারের তালিকায় প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। স্বাভাবিকভাবেই এতে খুশি বৃহৎ সংখ্যক বাঙালি মানুষ। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন রাজনীতি থেকে দূরে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, আজও যেন কোথাও বাংলার রাজনীতিতে আগের মতোই প্রাসঙ্গিক বুদ্ধ। তবে তাকে মোদী সরকারের পদ্মভূষন দেওয়া নিয়েও নতুন রাজনৈতিক অঙ্কের আঁচ পাচ্ছেন রাজনীতিবিদরা।

তবে বাংলা থেকে বুদ্ধ ভট্টাচার্য্য একা নন, তিনি ছাড়াও বাংলা থেকে ‘পদ্মভূষণ’ পাচ্ছেন বাঙালি অভিনেতা ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়। শিল্পকলা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পদ্মভূষণ পাচ্ছেন তিনি। সেইসঙ্গে বুদ্ধ বাবুকে এই সম্মান দেওয়া হচ্ছে বাংলার সামাজিক ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য।

images 5 35

তবে খোদ বামফ্রন্ট দলই বুদ্ধদেবের এই সম্মান পাওয়া নিয়ে বিশেষ উত্তেজিত নন। বরং এই সিদ্ধান্তকে অনেকে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজনৈতিক প্যাঁচ বলেই মনে করছেন। এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানিয়েছেন, “এই সিদ্ধান্ত আমার কাছে বিশাল আনন্দের কিছু নয়। এই রাজ্যের স্বচ্ছ রাজনীতিবিদদের নাম করতে গেলে, প্রথম সারিতে কেবল বাম নেতাদেরই দেখা যাবে। বর্তমান শাসক দলের কেউই এই জায়গার ধারেকাছেও আসতে পারবেন না। তবে বুদ্ধবাবু নিজের রাজনৈতিক জীবনে যে কাজগুলো করেছেন তার জন্য তিনি দিল্লি থেকে কোনও পুরস্কারের প্রত্যাশা করেন না, উনি তা নিজের কর্তব্য হিসাবেই করেছেন। ঠিক যেমন রাজ্যের ক্ষমতায় থাকা নেত্রী মাঝে মাঝে মাইলেজ পেতে বুদ্ধবাবুর প্রসঙ্গে ভালো কথা বলে থাকেন, দিল্লিও সে ভাবেই মাইলেজ পেতে চাইছে। ”

তবে শেষ খবর পাওয়া অবধি সেই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য। তার বিবৃতি চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, “আমাকে কিছু জানানো হয়নি, তবে যদি সত্যি আমাকে পদ্মভূষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে আমি তা প্রত্যাখ্যান করছি।” এই নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হলেও রাজনৈতিক জীবনের সায়াহ্নে এসেও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য যে শিরদাঁড়া এখনও সবল রেখে চলছেন তা ফের একবার বুঝিয়ে দিলেন বাম জননেতা।

Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর