MA পাশ, কলেজে হতেন প্রথম! চাকরি না পেয়ে আজ রাজমিস্ত্রির কাজ করছেন বর্ধমানের বিশ্বজিৎ

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: একসময় কলেজে প্রথম হতেন। স্নাতক হয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরেও ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন। ভেবেছিলেন যেমন স্বপ্ন দেখেছেন তেমন ভাবেই নিজের জীবনটাকে গড়বেন। কিন্তু মানুষ ভাবে এক হয় আরেক। এমএ পাশ করেও চাকরি না পেয়ে এখন রাজমিস্ত্রির কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন বিশ্বজিৎ।

রাজমিস্ত্রির কাজেও যথেষ্ট দক্ষ বিশ্বজিৎ। বর্ধমানের শক্তিগড়, বড়শুল, কলানবগ্রামের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাসিন্দারা তার সাথে যোগাযোগ করে তাকে নিজেদের অট্টালিকা গড়ে তোলার ভার দেন। তিনি একা নন, অভাবের তাড়নায় তার বুড়ো বাবা-মা রবিন এবং টুনি মন্ডল-কেও তার সঙ্গে দিনমজুরের কাজ করতে যেতে হয়। বছর সাতাশের বিশ্বজিৎ এর চাল দেওয়া দুই কামরার ছোট্ট করে নিজের মা-বাবাকে নিয়ে থাকেন। লকডাউন এর আগে বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন। কিন্তু লকডাউনে মা-বাবার রোজকার এক অপরাধ সেই আশা ছাড়তে হয়েছে। ফর্ম ফিলাপের মতো পয়সা সব সময় উপলব্ধ থাকে না। তাই বাধ্য হয়ে নিজেই কাজে নেমে পড়েছেন কম্পিউটার জানা, এমএ পাশ করা বিশ্বজিৎ।

তার মা জানিয়েছেন কিভাবে অভাবের সংসারে কোনদিনও একবেলা কোনদিনও আধপেটা খেয়ে পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন বিশ্বজিৎ। ছেলেকে এভাবে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে দেখে ভালো লাগে না কিন্তু কিছু করারও নেই। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন যে রাজমিস্ত্রির কাজ করলেও আজ তার কোন অফিসের চেয়ার অলংকৃত করার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্য সকলের সমান হয় না।

শক্তিগড় থানার বড়শুল সিডিপি স্কুল থেকে ভালো নম্বর নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছিলেন। আজ স্কুলের কাছাকাছি অঞ্চলে একটি বাড়ি তৈরি করছেন। নিজের কলেজে পলিটিকাল সাইন্স নিয়ে দুর্দান্ত রেজাল্ট করেছিলেন। রয়েছে কম্পিউটারের ডিপ্লোমা কোর্স সার্টিফিকেটও। কিন্তু সেসব কাজে আসেনি। তবে এখনো হাল ছেড়ে দেননি বিশ্বজিৎ। সরকারি চাকরির পরীক্ষা না দিলেও বিভিন্ন বেসরকারি জায়গায় নিয়োগের খবর পেলে ছুটে যান নিজের সিভি হাতে নিয়ে। মনে এখনো আশা রয়েছে যদি একটা ভালো চাকরি পেয়ে নিজের বাবা-মাকে এই বয়সে কাজে পাঠানোর থেকে অব্যাহতি দেওয়া যায়।


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর