বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের জীবনের মৌলিক চাহিদা কি? অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এই তিনটেই তো। এই তিনটি জিনিসে যাতে কোন কমতি না আসে তার জন্যই মানুষ অহরহ পরিশ্রম করেন। সকাল থেকে রাত অব্দি শুধুমাত্র কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ছোটেন চাকরি করতে। কিন্তু দেখা যায় চাকরি করেও যতটা উপার্জনের (Business) প্রয়োজন ততটাও উপার্জন করতে পারছেন না। ফলে, স্বপ্ন তো দূর সাধারণভাবে বাঁচার রসদ টুকুই বিলীন হয়ে যায়। তবে এবার এক ব্যক্তি মোটা বেতনের চাকরি ছেড়ে নিজের স্বপ্ন পূরণের জন্য শুরু করেছেন ব্যবসা (Business)। যে ব্যবসার (Business) জালে আজ দুহাত ভরে উপার্জন করছেন টাকা।
চাকরি ছেড়ে কে ব্যবসা করছে?
পূর্ব বর্ধমানের ব্যক্তি দেবাশিস চন্দ্র। তিনি মূলত পূর্ব বর্ধমানের দাঁইহাট শহরের বাসিন্দা। দেবাশিস কিন্তু একজন বড় মাপের শিল্পী বলা যেতে পারে। আজ তাঁর এই শিল্প ক্ষমতাই তাকে এত বড় সাফল্য এনে দিয়েছে। জানা গিয়েছে, দেবাশিস বাবু কলকাতার একটি প্রতিষ্ঠানে ফাইন আর্টস নিয়ে পড়াশোনা সম্পন্ন করেন। ছোট থেকেই তার হাতের কাজ দুর্দান্ত। তাই পড়াশোনা শেষ করি তিনি চলে যান হায়দ্রাবাদে। আর সেখানে টানা ১৭ বছর একটি সংস্থায় মূর্তি তৈরির কাজ করেন। ছোট বড় ,মাঝারি, ছেলে-মেয়ে পশুপাখি সব রকমের মূর্তি তৈরি করতে এক্সপার্ট দেবাশিস।
তবে দীর্ঘদিন এখানে কাজ করতে করতে তার জীবনে নেমে এসেছে একঘেয়েমি। তাই তিনি ছুটে এলেন নিজের দেশের বাড়িতে। ২০১৬ সালে বর্ধমানে ফিরে আসেন তিনি। কিন্তু রুজি রোজগারের কোন ঠিক ঠিকানা ছিল না তখন। তাই পেটের ভাত যোগান দিতে নিজের বাড়িতেই মূর্তি তৈরীর কাজ শুরু করেন। আর সেই সিদ্ধান্তই যেন তার জীবনে বদল এনে দেয়। হাতের জাদুতে গড়ে উঠতে থাকে একের পর এক মূর্তি।
আরো পড়ুন : হয়ে যান সাবধান! এই কলা খেলে নির্ঘাত হবে ক্যান্সার, বিপদে পড়ার আগে এখনই নিন জেনে
আজ দেবাশিস বাবুর তৈরি মূর্তি পৌঁছে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, “২০০৭ সাল থেকে আমি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত আছি। আমি আগে হায়দ্রাবাদে এই কাজই করতাম। ২০১৬ সালে বাড়ি ফিরে এসে নিজের ব্যবসা শুরু করেছি। একাডেমি অফ ফাইন আর্টস থেকে আমি আর্ট এবং স্কাল্পচার নিয়ে পড়াশোনা করেছি। তারপর হায়দ্রাবাদে কাজ শিখেছিলাম।” এখন সেই কাজই তার জীবন ভরে দিচ্ছে।
আরো পড়ুন : প্রতি গানে পারিশ্রমিক ১০ কোটি টাকা! অরিজিৎ-শ্রেয়ার চেয়েও “দামি” বলিউডের এই শিল্পী
বর্তমান যুগে প্রায় সকলেই ঘর সাজাতে ভিন্ন রকমের মূর্তি ব্যবহার করে থাকেন। আর সেই মূর্তিই গড়ছেন দেবাশিস বাবু। তবে তিনি কাঠের কিংবা ওই সিমেন্ট দিয়ে মূর্তি গড়ছেন এমনটা নয়। তিনি নিজের ব্যবসাতে (Business) এনেছেন বিকল্প পন্থা। জানা গিয়েছে, দেবাশিস বাবু মূর্তি তৈরির জন্য ফাইবার ব্যবহার করছেন। বর্তমানে ফাইবার মূর্তির বিশেষ চল শুরু হয়েছে। তাই তিনি এমন বিকল্প বেছে নিয়েছেন। প্রত্যেকদিন হাজার হাজার মূর্তি এখানে তৈরি করা হয়। তার কারখানাও ছোট বড় বিভিন্ন ধরনের এই মূর্তিতে ভর্তি।
এমনকি যার যেমন চাহিদা তাকে তেমনই মূর্তি গড়ে দেওয়া হয়। এই বিষয়ে দেবাশিস বাবু বলেন, “চাকরি করার পরবর্তীতে ইচ্ছা ছিল নিজের বাড়িতে ফিরে আসার। তাই বাড়ি ফিরে এসে এখানকার কয়েকজনকে নিয়ে আমি এখন এই ব্যবসা করছি। আমার তৈরি মূর্তি এখন ত্রিপুরা,আসাম এবং রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় যায়।”
জানা গিয়েছে, এই মূর্তি গড়েই তিনি প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা কামাচ্ছেন। সারা বছরই এই মূর্তির কাজ তার বাঁধা ধরা। বিশেষ করে পুজো আসলে যেন কাজের চাপ চারগুণ বেড়ে যায়। তবে এই মূর্তি শুধু ঘর সাজানো নয় যে কোনো ডেকরেশনের কাজেও ব্যবহার করা হয়। আজ দেবাশিস বাবুর হাত ধরে আজ পূর্ব বর্ধমানের বহু জায়গা এই মূর্তি কাজে ঢাকা পড়ছে। এমনকি বর্ধমানে এই ব্যবসার (Business) কারণে দেবাশিস চন্দ্রর বিশেষ নাম ডাক রয়েছে।