বাংলাহান্ট ডেস্ক: বেঙ্গালুরুর এক ছোট্ট গ্রামে জন্ম রেণুকার। বাবা ছিলেন পেশায় পুরোহিত। রেনুকার বাবা সব সময় কাজ পেতেন না। এদিকে ৫ জনের সংসার, তাই খাবার জোটাতে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনো রাস্তা ছিল না। বাবার সাথে রেনুকা ভিক্ষে করতেন রাস্তায়। তিন ভাইবোনের মধ্যে রেনুকা সবথেকে ছোট। রেনুকার বাবা তার বড় দাদা দিদিকে পড়াশোনার জন্য ব্যাঙ্গালুরুতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
রেনুকাকে ভর্তি করা হয় গোপাসন্দ্রার একটি স্কুলে। কিন্তু বাবাকে সাহায্য করতে গিয়ে প্রায়ই স্কুল যাওয়া হতো না রেণুকার। রেনুকা যখনই খবর পেত কোথাও গরিবদের ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে তখনই বাবার সাথে হাজির হতেন সেখানে। সেইসব একটি তারপর নিয়ে গিয়ে বিক্রি করে দিতেন বাজারে। সেই টাকা দিয়ে চলত না সংসার। তারপর একটি বাড়িতে কাজের লোকের কাজ করতে থাকে রেনুকা।
কিন্তু পড়াশোনার প্রতি রেণুকার ঝোঁক ছিল একটু বেশি। তারপরের রেনুকা নিজের উপার্জনে চিকপেটের একটি স্কুলে ভর্তি হয়। কিন্তু মাত্র তিন বছর পরেই বাবার মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আবার ফিরে আসে গ্রামে। রেনুকার বড় দাদা তার মা এবং বোনের দায়িত্ব নিতে চাইনি। সব দায়িত্ব রেনুকা নিজের কাঁধে তুলে নেয়।
এরপর সংসার চালাতে এসে কখনো যোগ দেয় লেদার কারখানায়। কখনো প্লাস্টিক কারখানায়। কখনো নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করেছেন। আবার কখনো ছাপাখানায় ঝাড়ুদারের কাজ করেন। ছাপাখানার মালিক তার কাজে খুশি হয়ে তাকে কম্পিউটারের কাজ শিখিয়ে দেন। কিন্তু সেই আয় যথেষ্ট ছিল না।
এই সময়ে রেণুকার পরিচয় হয় এক গাড়ির ড্রাইভার এর সাথে। তার কাছ থেকে শেখেন গাড়ি চালানো। এরপর ২০০৭ সালে ঋণ দিয়ে একটি গাড়ি কেনেন রেনুকা। নিজের গাড়ি নিজেই চালাতেন তিনি। পরে ব্যবসায় উন্নতি দেখে আরো ছটি গাড়ি কেনেন তিনি। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি রেনুকা কে। বর্তমানে সে ৮০০ গাড়ির মালিক। তার বছরের টার্ন ওভার ৩৮ কোটি টাকা। তার কোম্পানির নাম ‘প্রবাসী ক্যাব’। এই গোটা সংগ্রামে উনার জীবনের মূলমন্ত্র ছিল ‘বড় স্বপ্ন দেখুন,ঝুঁকি নিন। জীবনের সব পথে সৎ থাকুন।’