বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশে জোয়ান (Celery) প্রতিটি বাড়িতেই খাদ্য সামগ্রীর ক্ষেত্রে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মশলা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল জোয়ানের ঔষধি গুরুত্বও যথেষ্ট রয়েছে। আর সেই কারণেই বাজারে সবসময় এর চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। এমনকি, এটি ভালো দামেও বিক্রি হয়। অর্থাৎ, সামগ্রিকভাবে এটি একটি লাভজনক ফসল।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, জোয়ান কলেরা, কফ এবং বদহজমের মতো বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলায় সাহায্য করে। পাশাপাশি, এটি গলা ব্যথা, গলা ধরে যাওয়া, কানের ব্যথা, চর্মরোগ এবং হাঁপানি সহ আরও বিভিন্ন রোগের ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহৃত হয়। এমতাবস্থায়, বাজারে জোয়ানের প্রচুর চাহিদা থাকায় আপনি এটির চাষ করে মোটা অঙ্কের আয় করতে পারেন।
এদিকে, আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, প্রাচীনকাল থেকেই আয়ুর্বেদে জোয়ানের একটি আলাদা স্থান রয়েছে। উল্লেখ্য যে, জোয়ান আগে আমেরিকা, মিশর, ইরান ও আফগানিস্তানে চাষ করা হলেও এখন ভারতেও বিপুল পরিমাণে চাষ হচ্ছে।
মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, তামিলনাড়ু, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ হল ভারতে জোয়ান চাষের ক্ষেত্রে প্রধান রাজ্য। রাজস্থানের চিতোরগড় এবং ঝালওয়াড়া জেলায় এটি প্রচুর পরিমাণে চাষ করা হয়। এর পাশাপাশি, ভিলওয়ারা, কোটা, বুন্দি এবং বাঁশওয়ারার মতো জেলাগুলিতেও জোয়ান ভালোভাবে উৎপাদন করা হয়।
কিভাবে করবেন এই চাষ: জানিয়ে রাখি যে, জোয়ান চাষ করার জন্য, ভালো নিকাশি ব্যবস্থা সহ উর্বর মাটি অত্যন্ত উপযুক্ত বলে মনে করা হয়। পাশাপাশি, এই চাষ দোআঁশ মাটিতে ভালো হয়। জোয়ান চাষের জন্য, জমির pH-এর মান ৬.৫ থেকে ৮-এর মধ্যে হওয়া উচিত। এদিকে, জোয়ান শীতের মরশুমে চাষ করা হয়। মনে রাখতে হবে যে, অতিরিক্ত তাপ এই গাছের জন্য ভালো নয়। আমাদের দেশে এটি রোপনের সঠিক সময় আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
কত হবে লাভ: জোয়ান গাছের জাত অনুসারে, প্রতি একরে গড়ে ১০ কুইন্টাল পর্যন্ত উৎপাদন পাওয়া যায়। বর্তমানে জোয়ানের বাজার মূল্য হল প্রতি কুইন্টালে ১২,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা। অর্থাৎ, এই চাষের সাহায্যে আপনি এক একর জমিতে জোয়ান চাষ করে সহজেই ২.২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন।