বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ১১২ ফুটের দুর্গা। পুজো হলে নজির গড়ার সম্ভাবনা ছিল প্রবল! তবে তার আগেই বিরাট সিদ্ধান্ত নিলেন উদ্যোক্তারা। মামলা লড়ার মতো আর টাকা নেই! তাই মহালয়ার দিনই পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা। রানাঘাটের কামালপুরের অভিযান সঙ্ঘের এই পুজো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি জল গড়িয়েছিল। দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে নিজেরাই পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিলেন উদ্যোক্তারা।
হাইকোর্টে (Calcutta High Court) টানাপোড়েন! হচ্ছে না ১১২ ফুটের দুর্গা
অভিযান সঙ্ঘের পুজোর উদ্যোক্তারা বলছেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় দুর্গা (Durga Puja) প্রতিমা করে তাক লাগাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আইনি জটিলতায় ফেঁসে যান। শেষ অবধি পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। দেবীপক্ষের সূচনার দিনই ১১২ ফুটের দুর্গাপুজো নিয়ে সামনে এল বড় খবর।
একজন পুজো উদ্যোক্তা, যিনি আদালতেও (Calcutta High Court) গিয়েছিলেন,তাঁর কথায়, ‘জেলাশাসকের কাছে আমাদের পাঠানো হয়েছিল, যাতে বিবেচনা করে দেখা যায়। আসলে এই পুজোয় একটা সম্পূর্ণ গ্রামকে তুলে আনার চেষ্টা ছিল। গ্রামের ছেলেমেয়েরাই কাজ করছিল। ফলে গ্রামের পরিকাঠামো উন্নত হতো। এখনও অবধি ৬০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এটা গ্রামবাসীদেরই টাকা’।
আরও পড়ুনঃ মহালয়া থেকেই পুজো শুরু! আজ কোন কোন প্যান্ডেলের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী? রইল তালিকা
ওই পুজো উদ্যোক্তা জানান, গ্রামবাসীদের কাছে আর আদালতে যাওয়ার মতো টাকা নেই। চাঁদা দেওয়ার মতো পরিস্থিতিও নেই। ‘আদালতে গেলে তো টাকা লাগে’, বলেন তিনি। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, রানাঘাটের (Ranaghat) সংশ্লিষ্ট গ্রামের বেশিভাগ মানুষই কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের পক্ষে ওই বিপুল পরিমাণ টাকা জোগাড় করাটাই কঠিন। শুধু তাই নয়, পুজোর জন্য ৪০ বিঘা জমি ফসল না করেই তাঁরা রেখে দিয়েছিলেন। পুজো না করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেই এক মহিলা যেমন কেঁদে ফেলেন।
চোখে জল নিয়েই তিনি বলেন, ‘আমাদের পুজো শেষ! গ্রামবাসীদের সবার চোখে জল। আশেপাশের গ্রামের লোকজনও একথাই বলছেন’। উল্লেখ্য, রানাঘাটের এই পুজোর বিষয়ে নদিয়ার জেলাশাসককে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। তবে তিনি অনুমতি দেননি।
জেলাশাসক রিপোর্ট দিয়ে হাইকোর্টে (Calcutta High Court) জানান, দমকল, বিদ্যুৎ দফতর, বিডিও, পুলিশ থেকে শুরু করে রানাঘাটের মহকুমা শাসক- ১১২ ফুটের দুর্গার অনুমতি দেয়নি কেউ। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ১১২ ফুটের দুর্গা পুজো কমিটি রোজ ৩ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচের কথা জানিয়েছে। তবে প্যান্ডেলের আয়তন অনুযায়ী রোজ প্রায় ২০ থেকে ২৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ দরকার। এছাড়া ওই প্যান্ডেল হলে যে পরিমাণ ভিড় হবে, তাতে আইনশৃঙ্খলাও বিঘ্নিত হতে পারে বলে অনুমান করছে প্রশাসন। এবার উদ্যোক্তারা নিজেই ওই পুজো না করার সিদ্ধান্ত নিলেন।