বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রথমে নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) উদ্দেশ্য করে হুঁশিয়ারি এবং পরবর্তীতে স্কুল শিক্ষা দফতরের অধিকর্তার কাছে হলফনামা চেয়ে বসা; এদিন একটি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বেশ কড়া মেজাজেই ধরা দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta Highcourt) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Abhijit Ganguly)। বর্তমানে প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক সব মিলিয়ে মোট ২৪ থেকে ২৫ হাজারের মতো শূন্য পদ থাকলেও এখনো পর্যন্ত কেন সেগুলিতে নিয়োগ করা হয়নি, সে প্রসঙ্গে এদিন প্রশ্ন তুলে দেন অভিজিৎবাবু। একই সঙ্গে এই প্রসঙ্গে হলফনামা চাওয়ার পাশাপাশি ‘গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি’-র উদ্দেশ্যে হুঁশিয়ারি দিতেও ছাড়লেন না তিনি।
উল্লেখ্য, অতীতে একাধিক শূন্য পদে শিক্ষকদের নিয়োগ না করা প্রসঙ্গে আদালতকে কাঠগড়ায় তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এদিন একটি নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা চলাকালীন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিক ক্ষেত্রে বর্তমানে ৩৯৩৬ টি শূন্য পদ বর্তমান। এক্ষেত্রে আমাদের কোনো রকম নিষেধাজ্ঞা নেই, তা সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কেন কোন রকম নিয়োগ করা হচ্ছে না?” এরপরেই তিনি প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার শূন্য পদে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন। একই সঙ্গে আগামী ১৭ ই আগস্টের মধ্যে শিক্ষা দফতরের অধিকর্তাকে এই প্রসঙ্গে একটি হলফনামা জমা করার নির্দেশ পর্যন্ত দিয়েছেন।
এরপরেই অভিজিৎবাবু বলেন, “বাংলায় এক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তি বলেছেন যে, আদালতে নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণেই নাকি নিয়োগ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তবে প্রায় ২৫ হাজারের কাছাকাছি শূন্য পদে আমাদের কোন রকম নিষেধাজ্ঞা না থাকা সত্ত্বেও সেখানে কেন নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না? কথায় কথায় আদালতকে টেনে এভাবে মন্তব্য করলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার।”
সাম্প্রতিককালে, শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের তরফ থেকে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এক্ষেত্রে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দ্বারাই স্কুল সার্ভিস কমিশন এবং প্রাথমিক টেটের মতো মামলা গুলিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। এবং পরবর্তীতে এসকল মামলার দরুণই গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এর মাঝেই একাধিকবার আদালত সম্পর্কিত একাধিক মন্তব্য করতে শোনা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। কয়েকদিন পূর্বেই তিনি জানান, “রাজ্যে একাধিক শূন্য পদ থাকলেও আদালতে মামলা চলার জন্যই আমরা সেগুলিতে নিয়োগ করতে পারছি না।” গত একুশে জুলাই শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকেও তিনি এ সম্পর্কে মন্তব্য প্রকাশ করেন। ফলে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এদিনকার মন্তব্য ঘুরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে করা হয়েছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।