বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে সরকার। হাতে ৮ সপ্তাহ সময়। এবার এমনই নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha) এই নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য গত বছর উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনিতা কয়াল। এবার তাঁর পক্ষেই রায় দিল আদালত।
কোন মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
১০ বছর আগের ঘটনা। সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন অনাথবন্ধু কয়াল। সেই সময় বাঘের আক্রমণের মুখে পড়েন দক্ষিণ ২৪ পরগণার গোসাবা নিবাসী এই ব্যক্তি। তাঁর দেহ নিয়ে জঙ্গলে চলে যায় বাঘ। এরপর প্রায় এক দশক কেটে গেলেও মেলেনি অনাথবন্ধুর মৃতদেহ। খাতায়কলমে তিনি এখনও ‘নিখোঁজ’! এবার তাঁর স্ত্রী অনিতাকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
বাঘের হানায় নিখোঁজ ব্যক্তির দেহ যদি উদ্ধার না হয়, সেক্ষেত্রে রাজ্যের (Government of West Bengal) কী নির্দেশিকা হবে? এর আগে এমনটা জানতে চেয়ে রাজ্যের থেকে তথ্য তলব করেছিলেন বিচারপতি সিনহা। সোমবার রাজ্যের আইনজীবী রিপোর্ট দেন। জানানো হয়, মৃত ব্যক্তির ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বাঘের হামলায় মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ থাকলেই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বিবেচনা করে রাজ্য।
আরও পড়ুনঃ অপেক্ষার অবসান! ফের রাজ্য সরকারি কর্মীদের DA বাড়াল সরকার! এবার কত শতাংশ?
তবে অনাথবন্ধুর ক্ষেত্রে বিষয়টি আলাদা। বাঘে টেনে নিয়ে গেলেও তাঁর মৃতদেহ মেলেনি। বিগত ১০ বছর ধরে তিনি খাতায়কলমে ‘নিখোঁজ’! এই বিষয়ে জাস্টিস সিনহার পর্যবেক্ষণ, মৃতের সঙ্গীরা বাঘের হামলা দেখেছে এবং দেহ জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছে বাঘ। সেই কারণে এক্ষেত্রে অনাথবন্ধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত সম্ভব নয়। তাই এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ানই বাঘের কামড়ে মৃত্যুর একমাত্র প্রমাণ।
সেদিকে নজর রেখেই অনাথবন্ধুর স্ত্রী অনিতাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতির নির্দেশ, আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে বাঘের হামলায় মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ বাবদ রাজ্যের নির্ধারিত ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ অনিতাকে দেবে রাজ্যের বন দফতর।
হাইকোর্টের (Calcutta High Court) এই রায়ের ফলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন বলে মন্তব্য করেন মামলাকারীর আইনজীবী শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বাঘের কামড়ে প্রাণহানির পাশাপাশি বাঘে টেনে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলা সুন্দরবনের মানুষদের অন্যতম একটি সমস্যা। বহু ক্ষেত্রে মৃতদেহও পাওয়া যায় না। সেক্ষেত্রে অনিতার মামলায় উচ্চ আদালত যা রায় দিয়েছে তাতে অনেকের সুরাহা হবে বলে মনে করছেন আইনজীবী বন্দ্যোপাধ্যায়।