বাংলা হান্ট ডেস্কঃ নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Primary Recruitment Scam) নাম জড়িয়েছে একাধিক হেভিওয়েটের। তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহা (Tapas Saha)। প্রাথমিক নিয়োগ মামলার অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন তিনি। দিনকয়েক আগেই তাপসের মৃত্যু হয়েছে। এরপরেই নানান মহলে প্রশ্ন ওঠে, তেহট্টের বিধায়কের মৃত্যুর কারণে কি এই মামলার তদন্ত বন্ধ হয়ে যাবে? এবার বড় নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
নিয়োগ দুর্নীতিতে (Primary Recruitment Scam) সিবিআই তদন্ত কি চলবে?
টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে। রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে তাপসেরও বড় ভূমিকা ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তাঁকে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি সিবিআই। তদন্তের স্বার্থে তাপসকে একাধিকবার জেরা, তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
সম্প্রতি তাপসের মৃত্যুর পর নানান মহলে প্রশ্ন ওঠে, অন্যতম অভিযুক্ত প্রয়াত হওয়ায় কি নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত থমকে যাবে? মঙ্গলবার হাইকোর্ট জানাল, তেহট্টের তৃণমূল (Trinamool Congress) বিধায়কের মৃত্যু হলেও এই মামলার তদন্ত চলবে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অন্যতম অভিযুক্তের মৃত্যু হলেও সিবিআইয়ের তদন্ত চালাতে কোনও বাধা নেই।
আরও পড়ুনঃ ছাব্বিশের ভোটে টিকিট পাওয়াই কি লক্ষ্য? সব্যসাচীর ‘অ্যাকশন’ দেখে তুঙ্গে চর্চা
হাইকোর্ট জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় এজেন্সি আগের মতোই নিজের তদন্ত চালিয়ে যাবে। এই দুর্নীতি কাণ্ডের সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত থাকতে পারেন। সেটা খুঁজে বের করা দরকার।
এদিন আবার এই মামলার তদন্তে রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে সিবিআই (CBI)। দাবি করা হয়, রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখা প্রথমে এই মামলার তদন্ত করছিল। তবে তাদের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে সকল তথ্য, নথি দেওয়া হয়নি। রাজ্যের তদন্তকারী অফিসার এক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন না বলে অভিযোগ করা হয়। রাজ্যের দুর্নীতি দমন শাখার অফিসার অনুপম দাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সিবিআই।
একথা শুনে রাজ্যের উদ্দেশে বিচারপতি চক্রবর্তী জিজ্ঞেস করেন, অন্য সংস্থা যদি তদন্ত করে তাতে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থার তথ্য সরবরাহ করতে অসুবিধা কোথায়? সিবিআইকে তথ্য দেব না, আমি নিজেই তদন্ত করব! একজন তদন্তকারী অফিসার কি এমনটা বলতে পারেন?
এদিন সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্টের নির্দেশ, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের কেস ডায়েরি থেকে শুরু করে সকল তথ্য সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে হবে। রাজ্য এই নির্দেশ মেনে নেবে বলে জানায়। রাজ্য বলে, ৩-৪ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় এজেন্সির হাতে সব তথ্য তুলে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (Primary Recruitment Scam) দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত করছে সিবিআই। দুর্নীতির শিকড় কতদূর ছড়িয়েছে সেটা জানতে মরিয়া কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তেহট্টের বিধায়ক তথা মামলার অন্যতম অভিযুক্ত তাপস সাহার মৃত্যুর পর এই মামলার তদন্তের কী হবে তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল। অবশেষে সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বড় নির্দেশ দিয়ে দিল হাইকোর্ট।