বাংলা হান্ট ডেস্কঃ যাদবপুর কাণ্ডে তোলপাড় রাজ্য। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে আহত ছাত্র ইন্দ্রানুজ রায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আজই এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। পাশাপাশি এই বিষয়ে আগামী ৭ দিনের মধ্যে রাজ্যকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ উচ্চ আদালতের।
কড়া নির্দেশ হাই কোর্টের- Calcutta High Court
এদিন হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মামলা উঠলে আগামী ১২ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। গত কয়েক দিন ধরে সংবাদ শিরোনামে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। রাজ্যের অন্যতম এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে হেনস্তা থেকে শুরু করে অধ্যাপক, উপাচার্য ঘেরাওয়ের সাক্ষী থেকেছে রাজ্যের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। গত পয়লা মার্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার বৈঠক ঘিরে তুমুল উত্তেজনা বাঁধে। তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠনের বৈঠকের মাঝেই বিশ্ববিদ্যালয়ে চত্বরে ধুন্ধুমার।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর গাড়ি ভাঙচুর চলে। ঘটনার জেরে আহত হন তিনি। জখম হন দুই বাম ছাত্র নেতাও। এই নিয়ে ইতিমধ্যেই জল গড়িয়েছে হাইকোর্ট পর্যন্ত। এদিন এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, “যা ঘটেছে তা সহজেই এড়ানো যেত। পুলিশের গা ছাড়া মনোভাবের জন্যই এই বিপত্তি ঘটেছে। রাজ্য পুলিশ, গোয়েন্দা বিভাগের ভূমিকায় প্রশ্ন তুলে বিচারপতি বলেন, সাদা পোশাকে পুলিশ তো থাকেই, এমন অনেক কাজই আপনারা করেন যেটার অনুমতি থাকে না। একপক্ষের বয়ানের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।“ অপরপক্ষের বয়ান কেন নেই সেই নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি।
এদিন শুনানিতে এই মামলার সঙ্গে স্পেশাল ব্রাঞ্চকে যুক্ত করার কথা বলে হাইকোর্ট। বিরক্ত হয়ে বিচারপতি বলেন, “স্পেশাল ব্রাঞ্চের আধিকারিকরা কেন থাকেন? গোয়েন্দারা কি মন্ত্রীকে সতর্ক করেছিলেন ? মন্ত্রী কি সেই সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেছিলেন?” বিচারপতি ঘোষের পর্যবেক্ষণ, গোটা বিষয়টিই গোয়েন্দা বিভাগের ব্যর্থতা।
আরও পড়ুন: শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ির নীচে ‘চাপা’ পড়েনি কোনও ছাত্র! যাদবপুর কাণ্ডে পাল্টা চাঞ্চল্যকর অভিযোগ দেবাংশুর
হাইকোর্টের নির্দেশ,”এখন থেকে সব লিখিত আকারে হবে, না হলে পুলিশ সমস্যায় পড়বে।” ওপার বাংলার প্রসঙ্গও উঠে আসে বিচারপতির কথায়। পুলিশ প্রশাসনকে সতর্ক করে তিনি বলেন,”নিরাপত্তা পায় এমন ব্যাক্তির কাছাকাছি যদি বিক্ষোভকারীরা চলে আসেন, তাহলে সমস্যা দেখা দেবে।” এরপরই বাংলাদেশের সাথে তুলনা টেনে বিচারপতি বলেন, “পরিস্থিতি যেন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতো যেন না হয়। এটা যদি উদাহরণ হয় তাহলে কিন্তু গোটা রাজ্যে এটা ছড়িয়ে পড়বে। দুপক্ষকেই দায়িত্বশীল হতে হবে। মানুষ একবার বিশৃঙ্খল হয়ে পড়লে সামলাতে সময় লেগে যাবে।”