বাংলা হান্ট ডেস্কঃ প্রত্যেক বছরেই মতুয়া মহাসংঘের মেলা নিয়ে থাকে সীমাহীন কৌতুহল। আইনি জটিলতার কারণে এবছর এই মেলা নিয়ে উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। তবে অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশে ঠাকুরনগরের বারুণী মেলায় দায়িত্ব পেলেন মমতা বালা ঠাকুর। মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশে ঠাকুরবাড়ির অপর সদস্য শান্তনু ঠাকুরের আবেদন খারিজ করে এই মেলার দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে মমতা বালা ঠাকুরের অনুগামীদের হাতেই।
মমতাবালা নাকি শান্তনু কাকে মেলার দায়িত্ব দিল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
প্রসঙ্গত আগেই উত্তর-চব্বিশ পরগনা জেলা পরিষদ ঠাকুরনগরের মতুয়া উৎসবের অনুমতি দিয়ে দিয়েছিল মমতাবালা ঠাকুরের অনুগামীদের। কিন্তু যে আইনকে হাতিয়ার করে জেলা পরিষদ ওই মেলা করার অনুমতি দিয়েছিল তা ছিল প্রায় ৬২ বছর আগে বাতিল হয়ে যাওয়া একটি আইন। তাই এই বিষয়টিকে হাতিয়ার করে ওই একই অনুষ্ঠান করার অনুমতি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা করেছিলেন বনগাঁর বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।
মঙ্গলবার এই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি বিভাস পট্টানায়েক। মমতাবালা ঠাকুরকেই এই মেলার দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি। জানা যাচ্ছে, বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই শুরু হবে পুণ্যস্নান। এদিকে হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশের পরেও তৃণমূল ও বিজেপি প্রভাবিত দুই কমিটির পদাধিকারীরা বারুণী মেলা নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানেই উভয়পক্ষ মিলে ১৪ জনের মেলা পরিচালন কমিটি তৈরী করে। জানা যাচ্ছে এবার এই নতুন কমিটি ঐতিহ্যবাহী বারুণী মেলা পরিচালিত করবে।
আরও পড়ুন: IVF-এ ব্যবহার হয়েছে কার শুক্রাণু? নিরুত্তর ক্লিনিক, শিশুর মৃত্যুর পরেই হাই কোর্টে দম্পতি
মমতাবালা ঠাকুরের কথায়,’মেলার অনুমতি আমি পেলেও মেলা পরিচালিত হবে নতুন কমিটির মাধ্যমে। মিলেমিশে কাজ করলে বারুণী মেলা নিয়ে মতুয়াদের কাছে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছবে।’ অন্যদিকে শান্তনু ঠাকুরের দাদা তথা গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর জানিয়েছেন,’এবার যেটা হয়েছে, এতদিন তা হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে এই মেলা হবে।’ একইসাথে তিনি জানিয়েছেন এরফলে এবার বাইরের লোকজন ঠাকুরবাড়ির অন্দরে ও বারুণী মেলা নিয়ে রাজনীতি করতে পারবেন না। একইসাথে তাঁর সংযোজন, ‘ভবিষ্যতেও দুই কমিটি মিলে বারুণী মেলা করবে, এটাই চাইব।’
প্রসঙ্গত ঠাকুরনগরের এই বারুণী মেলার সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে মতুয়াদের ২১৪ বছরের পুরনো আবেগ। প্রত্যেক বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণ ত্রয়োদশী তিথিতে ঠাকুরবাড়ি সংলগ্ন মাঠে শুরু হয় এই মেলা। আগামী ৭ দিন ব্যাপী চলবে এই মেলা। বিগত প্রায় ১০ বছর ধরে মমতাবালা ঠাকুরের হাতেই এই মেলার দায়িত্ব রয়েছে। এবছরও শেষমেশ তিনিই এই মেলা করার অনুমতি পেয়েছেন।