‘নিয়োগ অবৈধ’, ফের চাকরি বাতিলের রায় হাইকোর্টের! আবারও শোরগোল বাংলায়

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিন কয়েক আগেই তৃণমূল জমানার সকল ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করেছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। সেই রায়ের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি। এখনও এই নিয়ে চর্চা অব্যাহত। তবে এর মাঝেই এক শিক্ষাকর্মীর এসসি শংসাপত্র বিতর্কে বিরাট রায় দিল আদালত।

ঝাড়গ্রামের (Jhargram) একটি বিদ্যালতের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী সুতপা হাটই। ১৯৯৭ সালে তফশিলি জাতি সংরক্ষিত শিক্ষাকর্মীর পদে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। দীর্ঘ ১৪ বছর চাকরিও করেছেন তিনি। ২০২১ সালের মে মাস অবধি বেতনও পেয়েছেন। কিন্তু এবার কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) রায়ের ফলে চিন্তার ভাঁজ সুতপার কপালে!

গত বুধবার কলকাত হাই কোর্টের বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফ থেকে জানানো হয়, সুতপার নিয়োগ অবৈধ। ভুয়ো শংসাপত্র দাখিল করে সংরক্ষিত আসনে চাকরি পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গেই প্রশাসনিক পদক্ষেপের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতি। তবে বেতন হিসেবে তিনি যে টাকা পেয়েছেন সেটা ফেরত দিতে হবে না বলে জানিয়েছে আদালত।

১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জামবনি ব্লকের দুবড়া আদর্শ বিদ্যামন্দিরে (উচ্চ মাধ্যমিক) শিক্ষাকর্মী (মেট্রন) পদে চাকরি পান সুতপা। দুবড়া নিবাসী সুতপাকে তফশিলি জারির জন্য সংরক্ষিত আসনে নিয়োগ করা হয়েছিল। জাতিগত শংসাপত্রও দিয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১১ সালে একটি মহল অভিযোগ তুললে সুতপার জাতিগত শংসাপত্র নিয়ে প্রশাসনিক মহলে অনুসন্ধান আরম্ভ হয়। ওই বছরই তাঁর জাতিগত শংসাপত্র বাতিল করে ঝাড়গ্রামের তৎকালীন মহকুমাশাসক।

এরপর জুন মাস থেকে বন্ধ হয়ে যায় সুতপার বেতন। বিদ্যালয় পরিচালন সমিতির তরফ থেকে তাঁকে ধরিয়ে দেওয়া হয় কারণ দর্শানোর নোটিশ। তবে পাল্টা জবাব দেননি তিনি। বরং তাঁর জাতিগত শংসাপত্র বৈধ, এই দাবি করে হাই কোর্টের রিট পিটিশন করেন। একাধিকবার শুনানি শেষে সুতপার বিপক্ষে রায় গেল।

আরও পড়ুনঃ পাঁচ-দশ নয়, ২৬১ কোটির মালিক! কীভাবে এত সম্পত্তি করলেন শাহজাহান? বিস্ফোরক তথ্য ফাঁস ED-র!

যদিও সুতপার দাবি, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। তাঁর কথায়, ‘সিঙ্গেল বেঞ্চের এই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করবেন’। তিনি জানান, এখনও বিনা মাইনে-তে বিদ্যালয়ে পরিষেবা দিচ্ছেন তিনি। স্কুলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২০১১ সালের জুন মাস থেকে বেতন পাচ্ছেন না সুতপা। তবে বিষয়টি যেহেতু হাই কোর্টে বিচারাধীন তাই তাঁকে বিদ্যালয়ে কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক এই প্রসঙ্গে বলেন, তিনি কিছু জানেন না। অন্যদিকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) শক্তিভূষণ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, হাই কোর্টের রায়ের প্রতিলিপি তিনি পেয়েছেন। তবে সুতপার নিয়োগের বিষয়টি মধ্যশিক্ষা পর্ষদের এক্তিয়ারভুক্ত। সেই কারণে এই বিষয়ে পর্ষদই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর