বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জাত-পাতের দোহাই দিয়ে শিব মন্দিরে ঢুকতে বাধা। মন্দিরে প্রবেশের অধিকার ছিল না তফসিলি জাতিভুক্তদের। এরপরই জল গড়ায় হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। হাইকোর্টের নির্দেশের পর এতদিনে কাটল জট। বৃহস্পতিবার মন্দিরে পুজো দেওয়ার সুযোগ পেলেন ওই তফসিলিরা। পুলিশি নিরাপত্তায় মন্দিরে পুজো দেন তারা।
হাইকোর্টের নির্দেশেই হল সুরাহা-Calcutta High Court
অভিযোগ ছিল, তফশিলি জাতির হওয়ায় শিব মন্দির ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। ‘সিডিউল কাস্ট’ বলে তাদের মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করা হয়। জেলা প্রশাসন অবশ্য নির্দেশ দিয়েছিল বৈঠক করে বিষয়টি মীমাংসা করে নিতে। কিন্তু লাভের লাভ না হওয়ায় হাইকোর্টে যান তারা। নদিয়ার বৈরামপুরে কালীগঞ্জ থানা এলাকার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল হাইকোর্ট।
আসন্ন গাজনের মেলায় শিব মন্দিরে ঢোকার অনুমতি ও সন্ন্যাসী হতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই তফশিলি জাতির বাসিন্দারা। প্রাচীন শিব মন্দিরে পুজো দেওয়া নিয়ে এই অভিযোগ সামনে আসতেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
বিরক্তি প্রকাশ করেন বিচারপতি ঘোষ প্রশ্ন করেন, “এটা কী করে হয়? পুলিসের ভূমিকা কী? একটা মানুষ তার অধিকার পাবে না!” উদ্বেগের সাথে বিচারপতি বলেছিলেন, “এটা তো আগে বাংলায় ছিল না। এমন সমস্যা এখনও বাংলায় নেই বলেই আমি বিশ্বাস করি। তবে কেন ওই মানুষগুলো উৎসবে যোগ দিতে পারবে না! কিসের ইগো?”
কোনও সিনিয়র অফিসারকে দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেন বিচারপতি। বলেন, এর নেপথ্যে যদি অন্য কোনও কারণ থাকেও সেটাও খুঁজে বের করতে হবে পুলিসকে। গোটা ঘটনায় বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। এরপরই হল সুরাহা। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর পুলিশের উপস্থিতিতে বঞ্চিত নিম্নবর্ণের মানুষদের পুজো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
আরও পড়ুন: নিয়োগ মামলায় রাজসাক্ষ্মী পার্থের জামাই! এবার আদালতে বিরাট সাক্ষ্য দিলেন এই ব্যক্তি
শুধু তাই নয়, পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রামের দু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসা হয়। পুলিশ জানায়, ওই আলোচনা সদর্থক হয়েছে। পুলিশ তরফে জানান হয়, উভয় বর্ণের মানুষই ওই শিব মন্দিরে পুজো দিতে পারবেন এবং আগামী চৈত্র মাসের গাজনেও অংশগ্রহণ করতে পারবেন। এদিন মন্দিরে ঢুকতে পেরে আবেগে ভাসেন বাসিন্দারা। পুলিশের ভূমিকাতেও তারা খুশি বলে জানান।