বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের একবার হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রশ্নের মুখে রাজ্য। গোর্খা টেরিটোরিয়াল প্রশাসন (জিটিএ) শিক্ষক নিয়োগ দু্র্নীতি (GTA Teacher Recruitment) মামলায় সিট গঠনের ভাবনা আদালতের। কেন এই দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এখনও তদন্ত শুরু হয়নি সেই প্রশ্ন বারংবার তুলেছিল হাইকোর্ট। এবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।
যা নির্দেশ দিল হাইকোর্ট-Calcutta High Court
বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশ, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিনয় তামাং, তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য-সহ অন্যান্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট জমা করতে হবে আদালতে। এর আগে পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্য ৪১ এ নোটিশ দেওয়ার ক্ষেত্রে কেন দেওয়া হয়নি সেই প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। এদিন ফের সেই প্রশ্ন তুললেন বিচারপতি বসু।
রাজ্যকে তুমুল ভর্ৎসনা করে বিচারপতি বলেন, “আপনারা নোটিস দিয়ে ডাকবেন কিনা আপনাদের ব্যাপার। ওরা কী কোনও ভিআইপি? আপনারা যদি পদক্ষেপ না নেন তাহলে এবার আদালত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।” যদিও পাল্টা রাজ্য জানায়, এফআইআর-এ নাম থাকলেই তাকে অভিযুক্ত বলা যায়না। এক্ষেত্রে নোটিশ দেওয়ার আগে ‘অভিযুক্ত’ নাকি ‘সন্দেহভাজন’ সেই বিবেচনা করে দেখতে হবে।
আদালতবান্ধব জানান, কারও নাম এফআইআর-এ থাকলে তাকে ৪১ এ নোটিস দেওয়াটাই স্বাভাবিক। পরবর্তীতে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হয়। আদালতে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের পাল্টা যুক্তি, ২০২৪ সালে ১০ এপ্রিল এফআইআর দায়ের হয়। তারপর রাজ্যের কী পদক্ষেপ নিয়েছে? যথাযথ তদন্তের পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।
আদালতের নির্দেশ, মামলার পরবর্তী শুনানিতে সিবিআই-এর তরফেও আইনজীবীকে উপস্থিত থাকতে হবে। উল্লেখ্য, স্কুল শিক্ষা দফতরের অভিযোগের ভিত্তিতে বিধাননগর উত্তর থানায় এফআইআর দায়ের করা হয়। গত বছর জানুয়ারি মাসে জিটিএ-তে নিয়োগ কারচুপি নিয়ে অভিযোগ তুলে একটি বেনামি চিঠি সামনে আসে শিক্ষা দফতরে। শিক্ষা দফতর সেই চিঠি ডিআইজি, সিআইডিকে ও ভিজিলেন্স কমিশনকেও পাঠায়।
সেই অভিযোগের ভিত্তিতে সিবিআইকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্টের বিচারপতি বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চ। সেই চিঠিতে অভিযুক্ত হিসেবে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, বিনয় তামাং, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ঘনিষ্ঠ হাবড়ার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ নেতা বুবাই বোস, স্কুল পরিদর্শক প্রাণগোবিন্দ সরকার-সহ রাজন্যা হালদারের স্বামী প্রান্তিক চক্রবর্তীরও নাম ছিল।
মামলা হলে আদালতে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল CBI- কে। আদালতের রায়ের পাল্টা সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চতর বেঞ্চে যায় রাজ্য। যদিও সেখানে ধাক্কা খায় রাজ্য সরকার। সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখে ডিভিশন বেঞ্চ।
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ঝড়-বৃষ্টি! কমলা সতর্কতা জারি হল কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গে: আবহাওয়ার খবর
যদিও ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, রাজ্য পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যেতে পারবে। পাল্টা সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। সেখানে সিবিআই তদন্তের নির্দেশের উপর স্থগিতদেশ দেওয়া হয়। শেষবারের শুনানিতে বিচারপতি বসু এই মামলার তদন্ত কত দূর এগিয়েছে, তা জানার জন্য রিপোর্ট তলব করেছিলেন। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৭ এপ্রিল।