বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পুর–দপ্তর ও রাজ্য সরকারের টানাপোড়েনের জেরে আটকে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর গ্র্যাচুইটি–সহ অবসরকালীন ভাতা। আদালতের নির্দেশের পরও লাভ হয়নি। এবার সেই মামলাতেই বড় নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)। ভরা এজলাসে ক্ষোভপ্রকাশও করলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)।
কি অভিযোগ? বছর সাতেক আগে বহরমপুর পুরসভার কর্মী ভবানীশঙ্কর রায় সাত বছর হল অবসর নিয়েছেন। অভিযোগ অবসরের এত বছর পরও অবসরকালীন সমস্ত সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে তাকে। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর গ্র্যাচুইটি–সহ অবসরকালীন ভাতা সংক্রান্ত এক মামলায় বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বারংবার আদালতের নির্দেশের পরও বকেয়া (Dues) মেলেনি।
অভিযোগ, আদালত একাধিকবার নির্দেশ দেওয়া সত্ত্বেও প্রাপ্য ২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে তার অ্যাকাউন্টে মাত্র ৩৪ হাজার টাকা ঢুকেছে। নভেম্বর মাসেই হাইকোর্ট তার সব টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছে। তারপর পাওনা বাকি টাকা দেওয়া নিয়ে পুর–দপ্তর ও রাজ্য সরকারের মধ্যে চিঠি চালাচালি শুরু হয়েছে এতদিনে। এই সমস্ত অভিযোগ নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মী।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলা উঠলে সমস্ত ঘটনা শুনে ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি। এরপরই ডিরেক্টর অফ লোকাল বডিজের বেতন বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। বিচারপতি বলেন, যতদিন না পর্যন্ত অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মীর যাবতীয় বকেয়া তার অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে ততদিন ওই ডিরেক্টরের বেতনও বন্ধ থাকবে।
এদিন আদালতে বহরমপুর পুরসভার পক্ষের আইনজীবী বলেন, গত মাসের আদালতের নির্দেশের পরই ওই কর্মীর পেনশনের টাকা তারা অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে গ্র্যাচুইটির ৪০ শতাংশ টাকা পুরসভা দেয়। ইতিমধ্যেই বাকি টাকা দেওয়ার জন্য রাজ্যকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সম্প্রতি বেড়েছে সরকারি কর্মীদের এই দুই ভাতা, জেনে নিন
তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করে জাস্টিস সিনহা বলেন, ওই কর্মীর টাকা কে মেটাবেন তা নিয়ে আপনারা দুই দপ্তর লড়াই করুতে থাকুন। এক জন কর্মীকে অবসরের পরে সরকারের দরজায় দরজায় ঘুরে হেনস্থা হতে হবে আদালত কখনই তা মেনে নেবে না। বিচারপতি সাফ বলেন, ‘আপনার এই বক্তব্য একেবারেই সন্তোষজনক নয়। কে টাকা মেটাবে তা নিয়ে আপনারা যুদ্ধ করতে থাকুন। কিন্তু কোনো কর্মীর হয়রানি একেবারেই বরদাস্ত করব না।’ ১৬ জানুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।