বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাতের ঘুম কেড়ে ব্যবসা নয়। জনস্বার্থ মামলায় বড় রায় দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High court)। শান্তিতে না ঘুমোতে পারার জেরে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) শমসেরগঞ্জের ভাসাইপাইকর গ্রামের বাসিন্দারা মামলা ঠুকেছিলেন হাইকোর্টে। সেই মামলাতেই এদিন বিরাট নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের।
ঠিক কি নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট? (Calcutta High court)
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের রায়, ওই এলাকা থেকে বাসন কারখানা সরিয়ে ফেলতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে। কারখানা এমন কোনো জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে যেখানে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি রয়েছে এবং বাসিন্দাদেরও আপত্তি নেই। আপাতত ওই কারখানায় উৎপাদন বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ আদালতের।
শান্তি নেই। রাতে ঘুমানো যাচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলে মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) শমসেরগঞ্জের ভাসাইপাইকর গ্রামের জিয়াউল শেখ-সহ পাঁচ এলাকাবাসী আদালতে মামলা ঠুকেছিলেন। আসলে ১৯৬৪ সালে ফরাক্কায় ব্যারেজ তৈরির প্রকল্পের জন্য মুর্শিদাবাদের শমসেরগঞ্জের ভাসাইপাইকর গ্রামের এলাকায় অনেক জমি অধিগ্রহণ করা হয়। মুর্শিদাবাদের মহব্বতপুর গ্রামের লোকেরাও নিজেদের জমি হারান। তবে সরকার তাদের সকলকে সাত ডেসিমেল করে জায়গা দেয়। জমিহারারা সকলেই এই জমি পান সরকার তরফে।
হাইকোর্টে (Calcutta High court) অভিযোগকারীদের বক্তব্য ছিল, সরকার বাড়ি বানানোর জন্য জমি দিলেও এক জন সেখানে বাড়ি না বানিয়ে কিছুদিন আগে এক স্টিলের বাসন তৈরির কারখানা তৈরি করেছেন। যার জেরে রাতের ঘুম উড়েছে এলাকাবাসীর। স্টিল কারখানা থেকে রাতের দিকে মারাত্মক শব্দ আসছে। সেই কারণে অনেকেই ঘুমোতে পারছেন না ঠিক মতো।
রোজ রোজ ঘুম না হওয়ার কারণে বাসিন্দাদের জীবনে শান্তি নষ্ট হয়েছে। পাশাপাশি এলাকার পরিবেশও নষ্ট হচ্ছে ওই কারখানার কারণে। এই অভিযোগ তুলেই দায়ের হয়েছিল জনস্বার্থ মামলা। তাদের দাবি ছিল ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনস্ত রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতরকে তারা জানিয়েছেন। জেলাশাসক, জেলা পুলিশের কাছে বারংবার অভিযোগ জানিয়েছেন তারা। তবে কোনো কিছুতেই কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা হাই কোর্টে মামলা করেছেন। আদালত যাতে পুলিশকে ওই জায়গা থেকে বাসন কারখানা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় সেই আর্জি নিয়েই তারা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: মন্ত্রিসভায় রদবদলের পথে মমতা! কারা হারাবেন পদ? আজ কালই ঘটতে চলেছে বড় কিছু
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা শুনানির জন্য উঠলে ওই জায়গায় কারখানা বানানোয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অনুমতি ছিল কি না, তা জানতে চায় হাই কোর্ট। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আদালতে জানায়, ওই এলাকায় কারখানা তৈরির অনুমোদন তুলে নেওয়া হয়েছে। এলাকার প্রধান আদালতে জানান, প্রাথমিক ভাবে অনুমতি দেওয়া হলেও পরে যাচাই করে দেখা যায়, ওই জায়গায় শুধু মাত্র বাড়ি তৈরির উপযুক্ত। এরপরই ১৫ দিনের মধ্যে কারখানা সরানোর নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)।