বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) নির্দেশ দিলেও বেআইনি ক্লাব ভাঙার কাজ হতে দেননি! এবার আদালতের রোষের মুখে পড়লেন বিধাননগর পুরসভার (Bidhannagar Municipality) ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি জয়দেব নস্কর। বিধাননগর পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের অধীন নয়াপট্টিতে আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ নামে একটি ক্লাব রয়েছে। কলকাতা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট উভয়ের তরফ থেকেই সেই ক্লাব ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। উক্ত ক্লাবের সভাপতি হলেন জয়দেব নস্কর।
জানা যাচ্ছে, কয়েক বছর আগে নয়াপট্টি নিবাসী প্রামাণিক পরিবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁরা জানান, তাঁদের জমির ওপর জোর করে ক্লাবটি বানানো হয়েছিল। আদালতের নির্দেশ অনুসারে বিধাননগর পুরসভা দেখে সত্যিই আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘের (Aditya Smriti Sangha) কোনও বৈধ নকশা নেই। যে কারণে পুরসভা কর্তৃক ক্লাবটিকে অবৈধ ঘোষণা করা হয় এবং সেটিকে ভাঙার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুরসভার সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ক্লাবের সভাপতি জয়দেব এবং সম্পাদক তরুণ মণ্ডল। তবে কোনও ক্ষেত্রেই সুরাহা হয়নি। বরং পুরসভার সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়। এরপরেও পুলিশ এবং পুরসভার তরফ থেকে ক্লাব ভাঙতে যাওয়া হলে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। দু’বার বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ফিরে আসেন তাঁরা।
আরও পড়ুনঃ হোঁচট খেয়ে পড়লেন সাবিত্রী! শোনামাত্রই ছুটলেন অভিষেক, কে এই মহিলা?
এদিকে পুরসভার নির্দেশ কার্যকর না হওয়ায় প্রামাণিক পরিবারের তরফ থেকে পুর কমিশনারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করা হয়। সেই সম্প্রতি সেই মামলায় দেওয়া নির্দেশ অনুসারে পুরসভার তরফ থেকে ক্লাবটি ভাঙা শুরু হয়। তবে এসবের মাঝেই জয়দেবরা হাই কোর্টে ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন করা হয়। সেই আবেদনের মাধ্যমে বলা হয়, আদিত্য স্মৃতি সঙ্ঘ ক্লাব সরকার অধিগৃহীত জমির ওপর তৈরি কিনা সেটা পুরসভার তরফ থেকে যাচাই না করেই ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে। তাই এই বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চান জয়দেবরা।
এই বিষয়টিতেই রেগে যান জাস্টিস অমৃতা সিনহা। ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন খারিজ করার পাশাপাশি ক্লাবটিকে বেআইনি ঘোষণা করেন তিনি। একইসঙ্গে আবেদনকারী তথা ক্লাবের সভাপতি এবং সম্পাদককে ১ লাখ টাকা করে জরিমানা করেন। একটি মামলা হাই কোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্ট দুই জায়গাতেই খারিজ হওয়ার পরেও ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন দাখিল হয়েছে দেখে অবাক হয়ে যান বিচারপতি সিনহা। আবেদনকারীদের ‘বেপরোয়া মনোভাব’ মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, যদি একটুও ছাড় দেওয়া হয়, তাহলেও এই ক্লাব ভাঙার কাজ শেষ হবে না। পাশাপাশি এও বলেন, জোর করে যারা বেআইনি নির্মাণ করেন, তাঁরা ছাড় পাবেন না। আদালি ১৮ এপ্রিলের মধ্যে ক্লাব ভাঙার কাজ সম্পূর্ণ হয়ে কিনা এবং জরিমানা দেওয়া হয়েছে কিনা তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এদিকে ক্লাব সভাপতি জয়দেব বলেন, আইনি পরামর্শ নিয়েই ইন্টারলোকেটরি অ্যাপ্লিকেশন দাখিল করেছিলেন তিনি। আইনের কিছু জানেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। একইসঙ্গে বলেন, আদালতের নির্দেশ যারা মানতে চাননি তাঁদের তিনি বুঝিয়েছিলেন যাতে ক্লাব ভাঙার কাজে বাধা না দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশের পর ক্লাবের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন না বলেও দাবি করেন তিনি।