বাংলা হান্ট ডেস্কঃ মামলাকারীদের বিরাট জয়। ২০২২ সালের প্রাথমিকে নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় বিএড ও ডিএলএড ডিগ্রি থাকা পরীক্ষার্থীদের প্যানেলে অংশগ্রহণের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। এদিন প্রাথমিক নিয়োগ (Primary TET) নিয়ে এই রায় দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজা শেখর মান্থা। শুক্রবার এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, “প্রাথমিক বোর্ডকে নিয়োগের খাতিরে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। তবুও একজন নাগরিককে সরকারি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যায় না। তার অধিকারও খর্ব করা যায় না।’’
এদিন শুনানিতে বিচারপতি বলেন, মামলাকারী পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা মেধা তালিকা প্রকাশ করতে হবে এবং তারা প্যানেলে সুযোগ পান কিনা পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে তা খতিয়ে দেখতে হবে। ২০২২ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় দ্বিতীয় মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি মান্থা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও বোর্ড তাদের নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত অত্যন্ত কঠোর। প্রসঙ্গত, প্রথম মেধাতালিকা প্রকাশের পরই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ১২ জন প্রার্থী৷
বুধবার নয় হাজার ৫৩৩ জন প্রাথমিক শিক্ষক (Primary Teacher) নিয়োগের জন্য প্যানেল প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board Of Primary Education)। এরপরই ২০২২-এর প্যানেল সংক্রান্ত নোটিফিকেশন চ্যালেঞ্জ করে ১২ জন প্রার্থী মামলা দায়ের করে কলকাতা হাইকোর্টে।
প্রসঙ্গত, গত বছর একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএড ডিগ্রি থাকা চাকরি প্রার্থীরা যোগ্য নয়। ডিএলএড ডিগ্রি যাদের রয়েছে তাদের নিয়োগ করতে হবে। সুপ্রিম নির্দেশ মেনে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রকাশিত মেধাতালিকায় বিএড করা প্রার্থীদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। ডিএলএড ডিগ্রিকে গুরুত্ব দিয়ে তৈরী হয় মেধাতালিকা।
মেধাতালিকা প্রকাশের পরই চাকরিপ্রার্থীর বি.এড এবং ডিএলএড উভয় ডিগ্রিধারী চাকরিপ্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হন। আগে ২০২২ সালের ফর্ম পূরণের সময় কেউ কেউ বিএড এ নম্বর বেশি থাকায়, কেউ আবার বিএড উচ্চতর যোগ্যতামান হওয়ায় ফর্ম ফিল আপের সময় ডিএলএড ডিগ্রির বদলে বিএড ডিগ্রি দেন। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্ট জানায় প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য বি.এড গ্রাহ্য নয়।
আবার মামলাকারীদের কিছুজনের দুটি ডিএলএড ডিগ্রি রয়েছে। একটি মুক্ত বিদ্যালয় দ্বারা এবং অপরটি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দ্বারা স্বীকৃত। ২০২২ সালের নিয়োগের ফর্ম ফিলআপের সময় তারা মুক্ত বিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ডিএলএড ডিগ্রি এবং সেই নম্বরের উল্লেখ করেন। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্ট জানায় মুক্ত বিদ্যালয় থেকে পাওয়া এই ডিগ্রি বৈধ নয়। এই অবস্থায় এমন প্রার্থীরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। সেই মামলার প্রেক্ষাতেই এদিন টেটে দ্বিতীয় প্যানেল প্রকাশের নির্দেশ দেন বিচারপতি মান্থা।