বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভোটের আগেই প্রতিশ্রুতির ঝুলি নিয়ে হাজির হন নেতা-মন্ত্রীরা। ঠিক যেমনটা চলে আসছে, ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান’ নিয়ে। কিন্তু শুধু প্রতিশ্রুতি দেওয়াই সার। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার ব্যাপারে কোন হেলদোলই দেখা যাচ্ছে না। যার ফলে ফি বছর বন্যায় বানভাসি ঘাটালের মানুষজন। দিনের পর দিন এইভাবে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের কাজ না এগানোয় এবার ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)।
রিপোর্ট তলব করল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান কবে বাস্তবায়িত হবে? ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই তা জানানোর নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। জানা যাচ্ছে, হাতে আছে আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ। আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্যের সেচ দপ্তরের সচিবকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ।
এদিন আদালতে (Calcutta High Court) আবেদনকারীর আইনজীবী দাবি করেছে, ১৯৫৯ সাল থেকে ঘাটালে এই বন্যার সমস্যা চলছে। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েরই এই প্রকল্পের জন্য ৫০ শতাংশ করে অনুদান দেওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ কেন্দ্র অর্থ দিলেও বছরের পর বছর ধরে এই ব্যাপারে কোন হেলদোলই নেই রাজ্যের। তাই ঘাটাল বাসীকে বন্যার হাত থেকে বাঁচাতে রাজ্য কিছু করছে না বলেই অভিযোগ করেছেন আবেদনকারীর আইনজীবী।
এরপর এদিন ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের রিপোর্ট তলব করেন প্রধান বিচারপতি। এদিন আদালতে রাজ্য এবং সিএজি আলাদা আলাদা রিপোর্ট পেশ করে। কিন্তু রিপোর্ট দেখেই এদিন প্রচন্ড ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন,’কবে কাজ শেষ হবে? বন্যা কিভাবে বন্ধ করা যাবে? এখানে তো কটা লুঙ্গি দেওয়া হয়েছে ,আর কত জনকে খাবার দেওয়া হয়েছে সেই রিপোর্ট রয়েছে। কিন্তু পাকাপাকি ভাবে এই বন্যা কিভাবে আটকানো যায় সেই কাজ কতটা কি হয়েছে?’ অবৈধ দখলদার সরানো এবং নদীবাঁধ তৈরির কাজ কতদূর?’
আরও পড়ুন: মালদহে প্রকাশ্য দিনের আলোয় খুন তৃণমূল নেতা! মাথা ফুঁড়ে বেরিয়ে গেল গুলি
এবারে দিন মামলাকারীর আইনজীবী শংকর দলপতি জানান এটা রাজ্য ও কেন্দ্রের সমান সমান টাকার প্রকল্প। ২০১৯ সালের সিএজি রিপোর্টে উল্লেখ করা রয়েছে চার হাজার কোটির প্রজেক্ট। এরপর প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন।,’কাজ কবে শুরু হবে? কাজ হতে হতে তো পরের বছরের বন্যা শুরু হয়ে যাবে!’
২০১৯ সালে মূলত পূর্ব-পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া,হুগলির বন্যা পরিস্থিতি রুখতে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান চালু করার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। নদী বাঁধে ভাঙন আটকাতে নতুন নদীবাঁধ তৈরি,পাকা ড্রেনেজ ব্যবস্থা তৈরি করারও কথা ছিল। মাঝে কেটে গিয়েছে, পাঁচ বছর। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি এই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। এছাড়া আদালতে জমা দেওয়া রিপোর্টেও শুধু উল্লেখ করা হয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে কি কি পদক্ষেপ এখানে নেওয়া হয় সেটাই। এই রিপোর্ট দেখে বেজায় ক্ষুব্ধ হন প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ।