বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ফের আদালতে ধাক্কা রাজ্যের। ক্যান্সার আক্রান্ত অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকাকে (Teacher) পেনশন এবং অবসরকালীন প্রাপ্য দিতে ‘না’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের। নথিপত্রের জটিলতার জন্য ওই শিক্ষিকা পেনশন এবং অবসরকালীন প্রাপ্য কোনোটাই পাবেন না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সুরাহা পেতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হন ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা। সম্প্রতি সেই মামলাতেই বড় নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মামলাকারী আরতিরাণী বিশ্বাস রাজারহাটের একটি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষিকা ছিলেন। গত নভেম্বর মাসে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। মামলাকারীর অভিযোগ, শিক্ষাগত যোগ্যতার যুক্তি দেখিয়ে তাকে পেনশন ও অবসরকালীন সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তবে তার আড়াই দশকের চাকরির সময়ে এই শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেনি সরকার।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এই মামলাটি ওঠে। মামলাকারী শিক্ষিকার আইনজীবীদের দাবি, তাদের মক্কেল বাংলাদেশে স্কুল এবং কলেজের লেখাপড়া শেষ করে ভারতে আসেন। ১৯৮৪ সালে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্বও পান। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে তিনি রাজারহাটের একটি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করা শুরু করেন। সব ঠিকঠাক চললেও অবসরের পর জটিলতার সৃষ্টি হয়।
২০২৩ সালে অবসরের পর বাংলাদেশি নাগরিক হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত ওই শিক্ষিকার পেনশন ও অবসরকালীন প্রাপ্য আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ। কর্মরত থাকাকালীন যা নিয়ে কখনও প্রশ্ন ওঠেনি সেখানে এত বছর চাকরি করার পর কী ভাবে এক জন ক্যানসার আক্রান্ত প্রাক্তন শিক্ষিকার প্রাপ্য আটকানো যায়, আদালতে সেই প্রশ্ন তোলেন মামলাকারীর আইনজীবীরা।
পাল্টা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের আইনজীবীর যুক্তি, মামলাকারী শিক্ষিকা বাংলাদেশি নাগরিক। তাই শিক্ষাগত নথি যাচাই না করে তাকে প্রাপ্য দেওয়া সম্ভব নয়। বৃহস্পতিবার এই মামলায় বিচারপতি সিনহার পর্যবেক্ষণ, কর্তৃপক্ষের এই আচরণ বেআইনি এবং ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এরপরই শিক্ষিকার প্রাপ্য দিতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: অভিষেকের নামে তুলতেন ‘টাকা’! ফিরহাদ ‘ঘনিষ্ঠে’র বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ! জল গড়াল থানায়
বিচারপতি সিনহার নির্দেশ, ৯০ দিনের মধ্যে মামলাকারীর সমস্ত বকেয়া প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে হবে কর্তৃপক্ষকে। পাশাপাশি ওই অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা যাতে নিজের ক্যানসারে চিকিৎসার খরচ চালিয়ে যেতে পারেন, তার জন্য উত্তর ২৪ পরগনার জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক)-কে প্রভিশনাল পেনশন চালু করারও নির্দেশ দিয়েছেন।