বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধেই রুল জারি করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েক (Justice Bivas Pattanayak) রুল জারি করে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। জানা যাচ্ছে, পকসো মামলায় (POCSO Case) আইন না মেনে গ্রেফতার করার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গেই অভিযোগ, মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে এদেশের সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইন মানা হয়নি। সেই সূত্রেই তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে রুল জারি করল উচ্চ আদালত।
আর কী নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০২২ সালে। এক নাবালক ও নাবালিকা যৌন সঙ্গমের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল। তার বছর দুয়েক পর নাবালিকার পরিবারের তরফ থেকে হাঁসখালি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। এরপর গ্রেফতার হন ওই নাবালক। এদিকে ঘটনার সময় ওই ছেলেটি নাবালক থাকলেও অভিযোগ দায়ের এবং মামলা রুজু করার সময় সে সাবালক হয়ে গিয়েছিল। পুলিশ তাঁকে সাবালক হিসেবেই দেখায়।
এরপর এই জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট অবধি। এই গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ ও মামলা দায়েরের পদ্ধতিগত ত্রুটি তুলে ধরে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আবেদনকারীর আইনজীবী সৌম্য ভট্টাচার্য ও অনির্বাণ তরফদার দাবি করেন, নাবালিকাকে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ ভিত্তিহীন। সেই সঙ্গেই তাঁরা বলেন, ঘটনার সময় অভিযুক্তের যে বয়স ছিল সেটাকেই প্রেক্ষাপটে রাখা উচিত।
আরও পড়ুনঃ দুর্যোগের জের! খারাপ আবহাওয়ার কারণে বদলে গেল মোদীর সফরসূচি, আলিপুরদুয়ারে সভা হবে তো?
এছাড়া গ্রেফতারির সময় সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) গাইডলাইনও মানা হয়নি বলে আদালতে জানানো হয়। কাউকে গ্রেফতার করার সময় কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে, কোন গ্রাউন্ডে গ্রেফতার করা হচ্ছে সেটা জানাতে হয়। সেই সঙ্গেই সাক্ষী হিসেবেও কাউকে রাখতে হয়। তবে এক্ষেত্রে পুলিশ তা করেনি।
জানা যাচ্ছে, কলকাতা হাইকোর্টে নিজের ভুল স্বীকার করে নেন এই মামলার তদন্তকারী অফিসার। তিনি ক্ষমাও চান। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। নদিয়ার হাঁসখালি থানার ভারপ্রাপ্ত আইও দীপক কুমার মালাকারের বিরুদ্ধে রুল জারি করে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি পট্টনায়েক। বিভাগীয় তদন্ত করে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এই মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, ‘পকসোর মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলায় গাইডলাইন মানছে না পুলিশ’! এর ফলে এই রকম আইনের অপব্যবহার করা হচ্ছে বলেও উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। সেই সঙ্গেই বলেন, এই ঘটনাকে সমগ্র রাজ্যের পুলিশের (West Bengal Police) উদাহরণ হিসেবে দেখা উচিত।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক ঘটনায় হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রশ্নের মুখে পড়েছে পুলিশের ভূমিকা। হাঁসখালির ঘটনাতেও বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। তদন্তকারী অফিসারের বিরুদ্ধে রুল জারি করে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।