বাংলা হান্ট ডেস্কঃ অবশেষে ঝামেলা মিটলো কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Gangopadhyay) ও রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্তের (Advocate General Kishor Datta)। পুরোনো ‘বন্ধু’ বলে সম্বোধন করে কিশোর দত্তের কাছে ক্ষমা চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। রাগের মাথায় কথা শুনিয়ে ফেলেছেন বলে মেনে নিলেন বিচারপতি।
এদিন আদালতে অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আপনাকে ৩৭ বছর ধরে চিনি। কয়েক দিন আগে অনেক কিছু বলে ফেলেছি আপনাকে। অত্যন্ত দুঃখিত। আপনার কাছে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। রাগের মাথায় অনেক কিছু বলে ফেলেছি আমি আপনাকে অনেক বছর ধরে চিনি। প্রায় ৩৭ বছর। আই অ্যাম ভেরি সরি।” এরপর রাজ্যের এজিও নরম সুরে বিচারপতিকে বলেন, “আমিও ওই দিন অনেক কিছু বলে ফেলেছিলাম।”
এরপর ফের আক্ষেপ প্রকাশ করে এজিকে বিচারপতি বলেন, “আপনি যা শুনেছেন, তা-ই বলেছেন। তবে আমি যা বলেছি তা রাগেই বলেছি।” সকলের সামনেই বিচারপতি বলেন, “আপনারা অনেকেই জানেন না, কিশোর আমার কত উপকার করেছেন। কিশোর, আমি, বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি আমরা একসময় একসঙ্গে ঘুরে বেড়াতাম।”
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে রাজ্যে মেডিকেলে ভর্তি মামলার শুনানিতে তুলকালাম বাঁধে কলকাতা হাইকোর্টে। মামলায় বিচারপতি সিবিআই (CBI) তদন্তের নির্দেশ দেওয়াকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এক কথা দুকথায় তর্কাতর্কি শুরু হয়ে যায়। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে উদ্দেশ্য করে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) কিশোর দত্ত বলেন, আপনার ব্যাপারে আমার কাছে একটি সুনির্দিষ্ট খবর রয়েছে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, কী খবর? উত্তরে রাজ্যের এজি বলেন, আপনি আসন্ন লোকসভা ভোটে বিজেপির হয়ে প্রার্থী হতে চলেছেন।
ভরা এজলাসে সরাসরি বিচারপতিকে এই প্রশ্ন করায় রীতিমতো থ হয়ে যান সকলে। এজির কথার উত্তরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “না, এ কথা ঠিক নয়।” তবে চুপ করে থাকেন নি বিচারপতিও। পাল্টা এজিকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “আপনি কীভাবে অ্যাডভোকেট জেনারেল হয়েছেন তা আমার জানা আছে। আগে তো একবার আপনাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আবার ফিরে এসেছেন।”
আরও পড়ুন: আসল না নকল! সন্দীপকে খুঁজতে গিয়ে নাজেহাল ED, কে তিনি? রাজ্যে দুর্নীতির তদন্তে জোর শোরগোল
এদিকে নজিরবিহীন এই ঘটনার জেরে শোরগোল পড়ে যায় হাইকোর্টে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে চলে যায় আইনজীবীদের একাংশ। রাজ্যের এজির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে চিঠিও দেন আইনজীবীদের একাংশ। ক্রমশ্যই উত্তপ্ত হয়ে উঠছিল পরিস্থিতি। এরপরই মঙ্গলবার আদালতে রাজ্যের এজির কাছে ক্ষমা চাইলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।