বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) এজলাস থেকে সরে গিয়েছে নিয়োগ দুর্নীতি (Abhishek Banerjee) সংক্রান্ত দুটি মামলা, যার মধ্যে একটি তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ডো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) মামলা ছিল। আর এই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ সামনে আসতেই শোরগোল পরে যায় রাজ্য-রাজনীতিতে। নানা মহল থেকে নানা প্রশ্ন, পাশাপাশি বিচারপতিকে বিঁধতেও দেরী করেনি শাসকদলের একাধিক নেতা। এবার এই প্রসঙ্গেই সরাসরি মুখ খুললেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।
ঠিক কী বললেন বিচারপতি? এদিন জাস্টিস গাঙ্গুলি বলেন, “আমার কাছে তৃণমূল বলে কিছু নেই। আমার কাছে আছে দুর্নীতি থাকা বা দুর্নীতি না থাকা। আমি যখন এই ধরনের মামলা বিচার করতে বসি, তখন আমি দেখতে চাই দুর্নীতি আছে কি না কিংবা দুর্নীতি নেই কি না।”
গতকাল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও রাজনৈতিক দলের নাম বা প্রসঙ্গ বা কোনও সুবিধা নেওয়া— এ সব তো আসে না। সেই মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম আসবে কেন? সে তো কুন্তল ঘোষ নিজে তুলেছেন।’’ তার কথায়, ‘‘আমার যত দূর মনে পড়ে, আমার কাছে যে ডকুমেন্ট জমা পড়ে তাতে কুন্তল নিজে অভিষেকের নাম করেন। এ তো আমার বানানো বা আকাশ থেকে পেড়ে আনা কোনও নাম নয়!’’
প্রসঙ্গত, নিয়োগ দুর্নীতিতে গ্রেফতার হয়েছেন সদ্য তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষ। গত মাসেই ইডি সিবিআই এর ওপর মারাত্মক অভিযোগ এনে আদালতে চিঠি দিয়েছিলেন কুন্তল। কুন্তলের সেই চিঠি সংক্রান্ত মামলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের উপর চলতি মাসেই অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ। চিঠিতে কুন্তল অভিযোগ করেছিলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা তাকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলানোর জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছেন। এর পরেই ঘটনাক্রমে নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিষেকের নাম উঠে আসে।
প্রসঙ্গত, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেওয়ায় কারণে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দুটি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে সরানো হয়েছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ আসার পর সেই রাতেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন দুর্নীতি সংক্রান্ত অন্য মামলাগুলিও তার এজলাস থেকে সরে যেতে পারে।
তবে সেরম কিছু না হলেও বিচারপতির আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে। গতকাল এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যদি ওই গ্রাউন্ডে একটি মামলা সরে যেতে পারে, তাহলে সব মামলাই সরে যেতে পারে ওই গ্রাউন্ডে। সুপ্রিম কোর্ট সরিয়ে দিতে পারে। সেখানে তো আমার কিছু বলার নেই। সুপ্রিম কোর্ট সর্বোচ্চ আদালত এবং আমাদের তা মানতে হবে।’