বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বহুদিন থেকে নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য। চাকরি কেলেঙ্কারির ভুরি ভুরি অভিযোগের ভিত্তিতে আদালতে চলছে একাধিক মামলা। একজোটে তদন্তের রহস্যভেদ করতে ময়দানে ইডি-সিবিআই। গত বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে (Calcutta High Court) এই মামলায় রিপোর্ট জমা করে দুই তদন্তকারী সংস্থা। আর সেই রিপোর্ট খতিয়ে স্তম্ভিত জাস্টিস অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)।
বৃহস্পতিবার এই মামলায় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ প্রকাশিত হল নির্দেশনামায়। সেখানে বলা হয়েছে, ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং তথ্য সংগ্রহ করেছে সিবিআই (CBI), তদন্ত প্রক্রিয়া এখনও চলছে। গতকাল প্রকাশিত নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, আকাশছোঁয়া দামে বিক্রি হয়েছে সরকারি চাকরি (Government Job)। এই মামলায় যে টাকার পরিমাণ সামনে এসেছে তাতে রীতিমতো চমকে উঠতে হয়!
প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিয়ে বুধবার অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন জাস্টিস অমৃতা সিনহা। তদন্ত কবে শেষ হবে? তদন্তকারীদের এই প্রশ্ন করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি এত দিন কেটে গেলেও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র কণ্ঠস্বরের নমুনা বিশ্লেষণের রিপোর্ট সিবিআই-ইডি (ED) কেন হাতে পায়নি সেই নিয়েও প্রশ্ন করা হয়।
গতকাল প্রকাশিত নির্দেশনামায় বলা হয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নানা পর্যায়ে টাকা নানান হাতে ঘুরেছে। এক দফতর থেকে অন্য দফতর, এক হাত থেকে অন্য হাতে টাকা গিয়েছে। এখানেই শেষ নয়! এই দুর্নীতি এই রাজ্যের গণ্ডি পেরিয়ে পড়শি রাজ্যেও পৌঁছে গিয়েছে। অপরাধের এই বিস্তার দেখে আদালতও স্তম্ভিত!
হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মোটা টাকায় সরকারি চাকরি বিক্রি করা হয়েছে। চার্জশিট পেশ করে তাড়াতাড়ি বিচার শুরু হবে এমনটাই আশা করছে আদালত। যদি না হয় তাহলে সময় যত এগোবে, ততই অপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রমাণও কমতে শুরু করবে। নির্দেশনামা অনুসারে, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের রিপোর্ট দেখে অনুমান, পিএমএলএ-এর মামলায় কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থাকে আরও সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: হাই কোর্টের ক্ষমতা ভুলে যাবেন না! কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে চরম ভর্ৎসনা বিচারপতির
সিএফএসএল থেকে এক অভিযুক্তের কণ্ঠস্বর দ্রুত আনতে ইডিকে পদক্ষেপ করার কথাও বলা হয়। অপরাধ কীভাবে এগোলো, বিশেষ করে ইডির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ‘লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস’ কোম্পানি, তার ডিরেক্টর ও কর্মীরা কী করে এত টাকা সঞ্চয় করেছেন তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় আদালত। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তত তাড়াতাড়ি দুই তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত শেষ করতে হবে। নিয়োগ দুর্নীতি মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ২৪ এপ্রিল।