বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো নিয়ে মামলা! এবার তাতেই বড় নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। বাড়ির বাসিন্দাদের অনুমতি ছাড়া বাড়িতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো যায় না, স্পষ্ট জানিয়ে দিল আদালত।
আর কী বলল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, একজন পেশাদার নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। গত সোমবার তার শুনানি ছিল। মামলাকারীর অভিযোগ, স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ার পর তিনি টালিগঞ্জের (Tollygunge) একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। সেই ফ্ল্যাটের যৌথ মালিকানা তাঁর এবং তাঁর স্বামীর নাম রয়েছে। তবে তাঁর স্বামী অবৈধভাবে সেই ফ্ল্যাটের মালিকানা নিজের বোনের নামে ট্রান্সফার করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ।
মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, স্বামীর থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর তাঁর স্বামী টালিগঞ্জের ওই ফ্ল্যাটে সিসিটিভি ক্যামেরা (CCTV Camera) বসিয়েছেন। শুধু তাই নয়! বারতোল্লায় ওই মহিলার যে শ্বশুরবাড়ি রয়েছে সেখানেও তাঁর শোওয়ার ঘরের বাইরে সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই মহিলার দাবি, তাঁকে ‘তাঁর বিবাহিত অধিকার এবং তাঁর সম্পত্তির অধিকার’ থেকে বঞ্চিত করেছে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। একইসঙ্গে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে লাগাতার শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনের অভিযোগও এনেছেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ প্রেমিকের কাছে বিদেশে যেতে ‘না’ পুলিশের, তরুণীকে অনুমতি দিয়ে বড় রায় কলকাতা হাইকোর্টের
এই মামলায় হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ, কোনও বাড়িতে যদি সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হয়, তাহলে সেখানকার বাসিন্দাদের অনুমতি অবশ্যই নিতে হবে। সেই ব্যক্তি অথবা ব্যক্তিদের অনুমতি ব্যতীত কখনও সেখানে সিসিটিভি বসানো যায় না। কারণ এর ফলে তাঁদের গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন হয়।
বিচারপতি ঘোষ (Justice Tirthankar Ghosh) বলেন, ‘ওই মহিলা যদি সেখানেই থাকেন, তাহলে তিনি ওই সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি অকেজো করে দিতেই পারেন’। ওই মহিলার সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি খুলতে কিংবা অকেজো করতে যাতে সমস্যা না হয়, সেটা দেখার জন্য টালিগঞ্জ থানার পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে মামলাকারী মহিলার স্বামী হাইকোর্টে দাবি করেন, ওই ফ্ল্যাট তাঁর বোনের। তিনি সেখানেই থাকেন। বোনের অনুমতি নিয়েই সেখানে সিসিটিভি বসিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তিনি। যদিও টালিগঞ্জ থানার পুলিশ জানিয়েছেন, ওই ফ্ল্যাটে অভিযুক্ত যুবকের বোন নন, বরং মামলাকারী মহিলাই থাকেন।
জাস্টিস ঘোষ এরপর অভিযুক্ত যুবকের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনার সম্পত্তি আপনারই। সেখানে আমি কোনও হস্তক্ষেপ করছি না। তবে সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হলে সেখানকার বাসিন্দার অনুমতি লাগবে। কারোর গোপনীয়তার অধিকার আপনি লঙ্ঘন করতে পারেন না। টালিগঞ্জ থানার রিপোর্টেই পরিষ্কার, মামলাকারী মহিলাই ওখানে থাকেন’। হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে টালিগঞ্জের ফ্ল্যাট নিয়েই বলা হয়েছে। কারণ তিনিই মূলত সেখানেই থাকেন। বারতোল্লার ফ্ল্যাট নিয়ে কিছু বলা হয়নি।