ধর্ষণ-খুনের পর ৯ মাস পার! আরজি কর কাণ্ডে এবার বড় নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট

Published On:

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ গত বছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের মে। আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Case) পর দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৯ মাস। তবে এখনও বিচার পায়নি নিহত চিকিৎসক পড়ুয়া। কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বিচারাধীন রয়েছে এই মামলা। শুক্রবার সেই মামলাতেই বড় নির্দেশ দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ (Justice Tirthankar Ghosh)।

হাইকোর্ট (Calcutta High Court) কী বলল?

গতকাল এই মামলায় উচ্চ আদালতে সিএফএসএল রিপোর্ট সহ স্টেটাস রিপোর্ট জমা করেছে আরজি কর কাণ্ডের তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সির আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানান, সিএফএসএল রিপোর্টের হলফনামার ভিত্তিতে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে।

বিচারপতি ঘোষ এদিন জানতে চান, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার কি কোনও অগ্রগতি হয়েছে? জবাবে সিবিআইয়ের (CBI) আইনজীবী জানান, সদ্য নতুন প্রধান বিচারপতি দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। সেই জন্য এখনও এই মামলার শুনানি হয়নি। বিচারপতি এদিন প্রশ্ন করেন, নির্যাতিতার পরিবারের হাতে কি এই নথি তুলে দেওয়া যাবে? জবাবে আইনজীবী মজুমদার জানান, সেটা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুনঃ SSC কাণ্ডে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পাশে রবীন্দ্রনাথ! গোলাপ বিলি করে কী বার্তা দিলেন?

হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিবিআইয়ের আইনজীবী এদিন বলেন, এই ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত প্রাক্তন সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায় (Sanjay Roy) ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। সেই সঙ্গেই একজন মহিলাও ঘটনাস্থলে ছিলেন। যে নির্যাতিতা চিকিৎসকের শরীরের নানান অংশ স্পর্শ করেন। রিপোর্টে সেই বিষয়ের বর্ণনা রয়েছে। সেই সঙ্গেই বডি কনটামিনেটেড হওয়ার কথাও এদিন জানায় তদন্তকারী সংস্থা।

বলা হয়, ময়নাতদন্তের আগে নির্যাতিতার মৃতদেহ পোস্টমর্টেম টেবিলে রাখা হয়েছিল। সেখানে কনটামিনেটেড হয়েছে। সেই সময় আরও একজন মহিলার ডিএনএ যুক্ত হওয়া অসম্ভব নয়। এছাড়া ঘটনা ঘটার পর সেখানে অনেক চিকিৎসক, পুলিশ কর্মী ছিলেন। তাঁরা নিহত তরুণী চিকিৎসকের মৃতদেহ স্পর্শ করেননি, এমনটা হতে পারে না।

RG Kar case RG Kar Hospital

বডি কনটামিনেটেড হওয়ার কথা শুনে বিচারপতি বলেন, আপনারা বলছেন কনটামিনেশন হয়েছে। সেটা কারোর স্পর্শ থেকে হতে পারে, কোনও অস্ত্র দিয়েও হতে পারে। নিহত তরুণী চিকিৎসকের পরিবারকে উদ্দেশ্য করে জাস্টিস ঘোষ বলেন, ওনাদের কথায় ঘটনাস্থলে ঘটনা ঘটার সময় আরও একজন মহিলা ছিলেন। আপনাদের মতো ওনারাও নথির ভিত্তিতে একটি রায় বানানোর চেষ্টা করছেন।

পাল্টা নিহত চিকিৎসক পড়ুয়ার পরিবারের আইনজীবী সুদীপ্ত মৈত্র বলেন, আমাদের একটাই আর্জি, তদন্ত চলাকালীন এগুলি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে না। আদালতের তত্ত্বাবধানে আমরা এই মামলার তদন্ত চাই।

Calcutta High Court

এই বিষয়ে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ, আবেদনকারী সাপ্লিমেন্টারি এফিডেভিট দিয়েছেন। সিবিআইয়ের তরফ থেকে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। থার্ড স্টেটাস রিপোর্ট দিয়েছে সিবিআই। সিএফএসএল রিপোর্টও দিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণ আছে। সব শেষে বিচারপতির নির্দেশ, সীমিত সময়ের জন্য এই রিপোর্ট আবেদনকারী তথা নির্যাতিতার পরিবারের হাতে তুলে দিতে হবে। আগামী ৩০ জুন ফের এই মামলার শুনানি হবে।

উল্লেখ্য, আরজি কর ধর্ষণ খুন কাণ্ডে ইতিমধ্যেই সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করেছে শিয়ালদহ আদালত। তাঁকে আমরণ কারাদণ্ড ও জরিমানা করা হয়েছে। তবে এখনও এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্নের উত্তর অধরা। হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা বিচারাধীন। সব শেষে নিহত তরুণী চিকিৎসক কবে ন্যায়বিচার পান সেটাই দেখার।

Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

X