বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজ্যের দুই থানার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ‘কুখ্যাত’, ‘অনিয়মের আখড়া’ আখ্যা দেন তিনি। সেই সঙ্গেই বলেন, থানা ঠিকভাবে কাজ করলে সাধারণ মানুষকে হয়রানির শিকার হতে হয় না। একজন মানুষকে ওয়ারেন্ট কার্যকর করানোর জন্য হাইকোর্টে কেন আসতে হবে? থানা FIR না নেওয়ার কারণে উচ্চ আদালতকে কেন অর্ডার দিতে হবে? প্রশ্ন তোলেন তিনি।
কোন দুই থানা নিয়ে এই পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের (Calcutta High Court)?
জানা যাচ্ছে, শহর কলকাতার একটি সাইবার অপরাধের মামলায় উত্তরবঙ্গের ভক্তিনগর থানা অঞ্চলের একজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়েছিল। ব্যাঙ্কশাল আদালতের তরফ থেকে সেই ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়। এরপর বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়নি। এরপর এই জল গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট অবধি। এবার তাতেই বড় পর্যবেক্ষণ বিচারপতি ঘোষের (Justice Tirthankar Ghosh)।
উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি থানার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক হয়েছে। শুক্রবার উক্ত মামলার শুনানিতে ভক্তিনগর (Bhaktinagar Police Station) এবং মাটিগাড়া থানার ‘দুর্নাম’ নিয়ে মুখ খোলেন জাস্টিস ঘোষ। তিনি বলেন, ‘ভক্তিনগর কুখ্যাত থানা হিসেবে পরিচিত। মাটিগাড়া থানারও একই অবস্থা। এই সকল থানা শিলিগুড়ি কমিশনারেটের সবচেয়ে মাথাব্যথার কারণ। সার্কিট বেঞ্চে বিচার করতে বসে বারবার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে’।
আরও পড়ুনঃ ‘নিজের ধান্দাপূরণের চেষ্টা’! সন্দীপ-অভিজিৎ জামিন পেতেই RG Kar ইস্যুতে ফুঁসে উঠলেন কুণাল
এদিন হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বলা হয়, বেনিয়াপুকুর থানা অঞ্চলের একটি সাইবার অপরাধের মামলায় গত মার্চ মাসে ব্যাঙ্কশাল আদালত ওয়ারেন্ট ইস্যু করে। এরপর প্রায় ৯ মাস কেটে গেলেও ভক্তিনগর থানার তরফ থেকে সেই নির্দেশ কার্যকর করা হয়নি। সরকারি কৌঁসুলি দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট অভিযুক্তের বিরুদ্ধে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতের তরফ থেকেও ওয়ারেন্ট জারি করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার মাটিগাড়া থানা সেই মামলায় তাঁকে আদালতে হাজির করে।
একথা শোনার পর বিচারপতি ঘোষ বলেন, ‘ভক্তিনগর, মাটিগাড়া; আমি এই দুই থানা সম্বন্ধেই জানি। অনিয়মের আখড়া। ওই আদালতে হাজির করানোর পর কেন সেখান থেকে ট্রানজিট রিমান্ডের অনুমতি নিয়ে কলকাতায় হাজির করানো হল না? ওই দুই থানা সম্পর্কে আমি জানি। ৩০ ডিসেম্বর অভিযুক্তকে আবারও জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির হতে বলা হলেও আর কিছু হবে না’।
এই মামলায় হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ, ওই আদালত থেকে অনুমতি নিয়ে অভিযুক্তকে যদি কলকাতায় হাজির করানো যেত, তাহলে আরও তাড়াতাড়ি বিচার হতো। কিন্তু বাস্তবে সেটা সম্ভব হল না। পুলিশ চাইলে এটা করতেই পারতো বলে মন্তব্য করেন বিচারপতি ঘোষ।