বাংলা হান্ট ডেস্কঃ জাল নথি বানিয়ে কয়েক হাজার জামিন! এইভাবেই একাধিক দাগি দুষ্কৃতীকে হাজত থেকে বের করে আনা হচ্ছে বলে অভিযোগ। জানা যাচ্ছে, কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে দায়ের হওয়া একটি মামলার প্রেক্ষিতে আলিপুরদুয়ার আদালতে এই জাল নথি তৈরির চক্রের খোঁজ মিলেছে। এবার সেই বিষয়েই আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ উচ্চ আদালতের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি (Justice Joymalya Bagchi) এবং বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের (Justice Gaurang Kanth) ডিভিশন বেঞ্চ।
কড়া নির্দেশ দিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)!
জানা যাচ্ছে, পেশায় আইনজীবী একজন প্রফেশনাল শিওরিটি তথা পেশাদার জামিনদারের প্রায় হাজার তিনেক সই জাল করা হয়েছে। এভাবেই জেল হেফাজতে থাকা অভিযুক্তদের জামিন পাইয়ে দেওয়ার একটি চক্র কাজ করছে আলিপুরদুয়ার আদালত চত্বরে। জাস্টিস বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ এই বিষয়ে নিশ্চিত বলে খবর।
এদিকে এই প্রেক্ষিতে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশীকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। তা দেখে অবাক হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালতের কথায়, একজন দক্ষ তদন্তকারী অফিসারকে দিয়ে তদন্ত করানো ও জেলার এসপিকে দিয়ে সম্পূর্ণ তদন্তে নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তবে রিপোর্ট দেখে পরিষ্কার, তাতে পুলিশ সুপারের নজরদারির কোনও ইঙ্গিত নেই।
আরও পড়ুনঃ সঞ্জয়ের মামলা লড়তে ইচ্ছুক! এগিয়ে এলেন ‘এই’ দাপুটে আইনজীবী! পরিচয় জানলে মাথা ঘুরে যাবে
এই বিষয়ে জাস্টিস বাগচি বলেন, ‘এটা শুধুমাত্র সই জাল করার বিষয় নয়। সেই নথি কে ব্যবহার করেছে, কে সার্টিফাই করেছে, ব্যাঙ্কের চেক কার, এই সবকিছুর তদন্ত করে দেখার কথা এসপির। তবে উনি সেসব কিছুই করেননি’। এই আবহে হাইকোর্টের নির্দেশ, পুলিশি তদন্তের অগ্রগতির বিশদ রিপোর্ট তৈরি করে এসপিকে সেটা খতিয়ে দেখে আগামী ২৯ জানুয়ারি জমা দিতে হবে। সেদিন মামলার তদন্তকারী অফিসারকেও হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জাল নথি তৈরি করে একাধিক দাগিদের জামিন পাইয়ে দেওয়ার বিষয়ে সার্কিট বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে পড়েছে আইনজীবীদের একাংশ। এই বিষয়ে আদালতের নির্দেশ, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি যেই হোক না কেন, তাঁকে পুলিশকেই গ্রেফতার করতে হবে। কালো গাউন কাউকে অপরাধ করার অনুমতি দিয়ে দেয় না। যত বড় আইনজীবীই হন না কেন, তিনি যদি অপরাধ করেন, তাঁকে গ্রেফতার করায় কোনও বাধা নেই’।
জানা যাচ্ছে, এই নিয়ে আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপারকে সতর্ক করে দিয়েছে উচ্চ আদালত (Calcutta High Court)। পুলিশি তদন্তের অগ্রগতির বিশদ রিপোর্ট তৈরি করে এসপিকে সেটা খতিয়ে দেখে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সেদিন এই মামলার তদন্তকারী অফিসারকেও উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।