‘৪ সপ্তাহের মধ্যে..,’ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শহরের (Kolkata) রাজপথে হুড়মুড়িয়ে কমছে বাস। যার জেরে চরম ভোগান্তির মুখে নিত্যযাত্রীরা। এবারে বাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বড় নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বেসরকারি বাস মালিকদের করা মামলায় সোমবার উচ্চ আদালতের সাফ নির্দেশ, আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তি পুনর্বিবেচনা করে দেখতে হবে।

হাইকোর্টের নির্দেশ মতো, আগামী বছরই ১৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে প্রায় ১৫০০ বাসের। আদালতের নির্দেশ কার্যকর করে গত ১ অগস্ট থেকেই ১৫ বছরের পুরনো বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশ কার্যকর করে পরিবহণ দফতর (15 year old vehicles)। যার জেরে এখনও পর্যন্ত রাজপথ থেকে উধাও হয়েছে মোট ৫৬৫টি বাস। মূলত দূষণ ঠেকাতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। যার জেরে মাথায় হাত পড়েছে বাস মালিকদের।

এদিন ২৪ নম্বর রুটের বাস মালিকরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সোমবার বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যাযয়ের এজলাসে মামলাকারীর দাবি, রাজ্য সরকারের জারি করা নির্দেশিকার ভিত্তিতে এ মাসেই বাতিল হতে চলেছে ২৪ নম্বর রুটের প্রায় ৩৯টি বাস। আগামী বছর মার্চে মোট সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় পনেরোশোর কাছাকাছি। তাদের দাবি ছিল, হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫ বছর বলা হলেও, মাঝে কোভিডের কারণে ২ বছর সেভাবে বাস চলেনি। তাই করোনার ওই দুই বছর মুকুব করা হোক। ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ মেনে রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তির পুনর্বিবেচনা চেয়েছিলেন তারা। এদিন তাদের আর্জিতে সায় দিয়েছে আদালত। রাজ্যের জারি করা বিজ্ঞপ্তি পুনর্বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।

মূল ঘটনা: কিছু বছর আগে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ ছিল, ১৫ বছরের বয়ঃসীমা পেরিয়ে গেছে এমনি কোনও বাস আর কলকাতা শহর কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথিরিটি (কেএমডিএ)-র এলাকায় চালানো যাবে না। গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ বছরের পুরনো বাস বা বাণিজ্যিক পরিবহণ আর চালানো যায়না।

পরে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বাসমালিকদের সংগঠন। যদিও তাতে হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত। বিষয়টি ফের কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্য। গত অগস্ট থেকেই ১৫ বছরের পুরনো বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে। যার জেরে ঘোর সমস্যায় পড়েছেন বাস মালিকরা। তাদের অভিযোগ, একেই ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে বাস ব্যবসায় খুব একটা লাভ হয়না। তার উপর এই পরিস্থিতিতে নতুন বাস কেনার সামর্থ্য তাদের নেই।

kolkata

আরও পড়ুন: বিল্ডিং প্ল্যান অনুমোদনের নিয়ম পরিবর্তন! বড় সিদ্ধান্তের পথে রাজ্য, ছোট্ট ভুলেই হতে পারে স্বপ্নভঙ্গ

রাজ্যের পরিবহণ দফতরের তথ্য বলছে, করোনার আগে শহরের (Kolkata) রাজপথে ৪ হাজার ৮৪০ টি বেসরকারি বাস চলত। এখন তা কমে হয়েছে মোটে ৩ হাজার ৬১৫। কোভিডের আগে মিনিবাস চলত ২ হাজার ৬৪। বর্তমানে তার পরিমাণ হয়েছে ১ হাজার ৪৯৮। এদিকে গত তিন মাসে পনেরো বছরের গেরোয় আরও পাঁচশোর বেশি বাস বসে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যার কথা জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাস মালিক সংগঠনগুলির একাংশ।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর