‘টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে সরকারের উকিল’, কামদুনিকাণ্ডের রায়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মৌসুমী

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২০১৩ থেকে ২০২৩! দীর্ঘ দশ বছর পর কামদুনি ধর্ষণ এবং হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১৩-র ৭ জুন কামদুনিতে গণধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ছিল ৯ জন। তবে নিম্ম আদালতে মামলা চলাকালীনই এক অভিযুক্তের মৃত্যু ঘটে। নিম্ন আদালতেই আরও দুজন বেকসুর খালাস পেয়ে যায়। বাকি ৬ জনের আরজির ভিত্তিতে আজ রায়দান করল কলকাতা হাইকোর্ট (Kamduni Gangrape Case Verdict)।

এই মামলাতে দোষী সাব্যস্ত ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড, এবং ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। এরপর সাজা কমানোর দাবি জানিয়ে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় ওই ৬ অভিযুক্ত। ঘটনায় ১০ বছর পর বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় অভিযুক্ত আনসার আলি মোল্লা এবং সইফুল আলি মোল্লার ফাঁসির পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। অন্যদিকে ফাঁসির সাজার বদলে আমিন আলী মুক্তি দেওয়া হয়।

বাকি তিন অভিযুক্ত ইমানুল হক, ভোলানাথ নস্কর এবং আমিনুর ইসলামকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছিল নিম্ন আদালত। আইনজীবী জানান, যেই তিন অভিযুক্তকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের এই মামলায় সাত বছরের কারাদন্ড হতে পারে। তবে ১০ বছর ধরে তারা যেহেতু কারাবাসে রয়েছে তাই ১০০০০ হাজার টাকা জরিমানা করে তাদের মুক্ত করেছে হাইকোর্ট।

আরও পড়ুন: ‘আমার চিঠি ফাঁস করছেন শুভেন্দু’, অভিষেকের অভিযোগ শুনেই ED-কে যা বলল হাইকোর্ট, শোরগোল

প্রসঙ্গত ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি এক কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার কামদুনিতে। ঘটনায় তোলপাড় হয়েছিল গোটা রাজ্য। দোষীদের শাস্তির দাবিতে চলে আন্দোলন। অভিযুক্তকে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। হয় CID তদন্ত। মামলায় অভিযুক্ত ৬ জনের সাজা শোনায় নগর দায়রা আদালত।

এরপর নিম্ন আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে যায় দোষীরা। এদিন সেই মামলায় শুনানি হল। আর শুনানির পরই সাজা কমানো এমনকি মুক্তির রায় নিয়ে অনেকেই বলছেন দোষীরা যথাযোগ্য শাস্তি পেল না। অন্যদিকে এদিন আদালতের রায় শুনেই রায় কান্নায় লুটিয়ে পড়েন কামদুনির দুই প্রতিবাদী নারী টুম্পা ও মৌসুমী।

kamduni case

এদিন হাইকোর্টের রায়ের পর মৌসুমী বলেন, “টাকার কাছে বিক্রি হয়ে গিয়েছে এই রাজ্য সরকারের উকিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের বিচার দিতে পারলেন না।’’ অন্যদিকে টুম্পা বলেন, ‘ অনেক আশা নিয়ে হাইকোর্টে এসেছিলাম। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক এটাই চেয়েছিলাম। সরকারের উপরে ভরসা করেছিলাম। রাজ্যবাসী আমাদের আন্দোলন দেখেছিল। দোষীরা শাস্তি পাবে, এই প্রতিশ্রুতিই সরকার আমাদের দিয়েছিল। আর আজ আমারা হাইকোর্টে নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি।’ তবে এই নিয়ে এরপর সুপ্রিম কোর্টে যাবেন বলে মন্তব্য করেন টুম্পা।

Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর