বাংলা হান্ট ডেস্কঃ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জমিতে জল প্রকল্প নির্মাণের মামলা মঙ্গলবার ফের শুনানির জন্য উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। এদিনও রাজ্যের (West Bengal State Government) ভূমিকায় প্রশ্ন তুলল রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মামলাটি এদিন উঠেছিল প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই আদালতের পর্যবেক্ষণ, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার উল্টো কথা বলছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব।
অসন্তুষ্ট হাইকোর্ট- Calcutta High Court
আদালতের পর্যবেক্ষণ— ‘‘রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের জন্য ঘোষণা করেছেন। আর এদিকে স্বাস্থ্যসচিব হলফনামা দিয়ে উল্টো কথা বলছেন। সেই হলফনামা নিয়ে আমরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলাম।’’ বিচারপতি বলেন, ‘‘গতকাল মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের জন্য বহু ঘোষণা করেছেন। বেতন বৃদ্ধি করেছেন। সাসপেনশন তুলে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। আদালত এই মামলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামোর বিষয়ে স্বাস্থ্যসচিবের অবস্থানের সমালোচনা করেছিল। স্বাস্থ্যসচিবের হলফনামা নিয়ে আদালত উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’’
এদিন স্বাস্থ্যসচিব আদালতে রিপোর্ট দিয়ে জানান, আগের চেয়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অবস্থার উন্নতি করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি পাল্টা ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, ‘‘৫০ বছরের পুরনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১০টি শয্যা রয়েছে। ১৯৭৬ সালেও তাই ছিল। ২৫ এ এসেও তাই। এদিকে স্বাস্থ্যসচিব বলছেন, সেখানে যথেষ্ট শয্যা রয়েছে। অন্তত কিছু যুক্তিপূর্ণ কথা বলুন। ”
এরপরই ফের এই মামলায় স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতরের সচিবের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে আদালত। সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মানোন্নয়নে রাজ্যের পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারে জানাতে হবে। আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানিতে রিপোর্ট জমার নির্দেশ আদালতের।
এদিন চিফ জাস্টিস বলেন, ‘‘১৯৭৫ সালে হাসপাতালের ১০টি শয্যা ছিল। ২০২৫ সালেও সেই সংখ্যা অপরিবর্তিত রয়েছে। ওই ঘটনায় আমরা অসন্তুষ্ট নই আসলে আমরা দুঃখিত। জল প্রকল্পও জরুরি। কিন্তু যাতে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার জন্য ৪০ কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে ছুটতে না হয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতে পরিষেবা পান সেটা বলেছি।’’ প্রসঙ্গত, এর আগের মামলাতেও একই প্রশ্ন তুলেছিল আদালত।
আরও পড়ুন: আগেই মিলেছে টাকা! বাংলার বাড়ি নিয়ে এবার আরও বড় সুখবর দিল রাজ্য সরকার, সিদ্ধান্ত নবান্নের
প্রসঙ্গত, ১৯৬২ সালে মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য জমি দিয়েছিলেন আবেদনকারী জাকির হোসেন মোল্লার পিতামহ। প্রথমে ছয় শয্যাবিশিষ্ট স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য ছ’বিঘা জমি দান করা হয়। পরবর্তীতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতির জন্য আরও কয়েক বিঘা জমি দান করা হয়। তারপর শয্যাসংখ্যা ছয় থেকে বেড়ে হয় ১০ হয়। তারপর ঠিকঠাক চললেও কোভিডের পর থেকে বেহাল দশা। কোনো উন্নতি তো হয় নি উল্টে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ফাঁকা অংশে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের অনুমতিতে একটি পাম্প তৈরির কাজ চলছে। ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন জাকির হোসেন।