‘একেবারে অতিসক্রিয়তা’, আর জি কর আবহেই বড় পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাইকোর্টের, কোন মামলায়?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আরজি কর কাণ্ডের পর থেকে শিরোনামে উঠে এসেছে রাজ্যের একাধিক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (Calcutta High Court)। গত সেপ্টেম্বর মাসে যেমন সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুরের অভিযোগে ১৪ জন ট্রেনি চিকিৎসককে বহিষ্কার করা হয়। ইতিমধ্যেই এই জল গড়িয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) অবধি। এবার তাতেই বড় পর্যবেক্ষণ আদালতের। বিচারপতির মন্তব্য, এটা তো কলেজ কর্তৃপক্ষের অতিসক্রিয়তা মনে হচ্ছে।

  • সাগর দত্তে ১৪ জনকে বহিষ্কার প্রসঙ্গে কী বলল হাইকোর্ট (Calcutta High Court)?

গত ৫ সেপ্টেম্বর সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে (Sagore Dutta Hospital) এই ঘটনাটি ঘটে। রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের সময় জোর করে ঘরে ঢোকার চেষ্টা, ভাঙচুর, গুণ্ডামির অভিযোগ তুলে ১৫ জনের বিরুদ্ধে কামারহাটি থানায় অভিযোগ করেছিলেন কলেজ অধ্যক্ষ মনোজিৎ মুখোপাধ্যায়। হাসপাতালের তরফ থেকে এদিন জানানো হয়, অধ্যক্ষের অভিযোগের প্রেক্ষিতেই গত ৭ সেপ্টেম্বর প্রথমে ৯ জনকে এবং তারপর আরও ৫ জনকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে নিষেধ করা হয়।

গত শুনানিতে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তরফ থেকে সিসিটিভি ফুটেজ এবং কেস ডায়েরি তলব করা হয়েছিল। কামারহাটি থানার কাছ থেকে তা তলব করা হয়। এদিন তা জমা করেন আইনজীবী। পুলিশের আইনজীবী রুদ্র নন্দী জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে ঘটনাটি ঘটেছে। অধ্যক্ষের ঘরের ভেতর যা হচ্ছিল, সেটা ট্রেনি চিকিৎসকরা বাইরে থেকে এসে মোবাইল ফোনে রেকর্ড করছিল। সেই কারণে যে অংশ থেকে রেকর্ড করা হচ্ছিল, সেখানে ভেতর থেকে সাদা কাগজ লাগিয়ে দেওয়া হয়। তবে বাইরে থেকে ধাক্কাধাক্কির জেরে কাঁচ ভেঙে যায়।

আরও পড়ুনঃ মিলবেই DA! এবার নয়া ‘চাল’ বাংলার সরকারি কর্মীদের, কতটা চাপে মমতা সরকার?

বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত (Justice Jay Sengupta) বলেন, এটা কোনও র‍্যাগিংয়ের ঘটনা নয়। রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের আইনজীবী সৌম্য মুখোপাধ্যায় জানান, রেসিডেন্ট চিকিৎসকরাই কলেজ কাউন্সিলে অভিযোগ করে পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাঁর সংযোজন, ‘ন্যাশানাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়ম অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। র‍্যাগিংয়ের মধ্যে এই ঘটনা পড়ে কিনা সেটা কলেজ কাউন্সিলের খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। কারণ ইন্টার্নরা এই রকম ঘটনা আগেও ঘটিয়েছে’।

Calcutta High Court

পাল্টা বহিষ্কৃত চিকিৎসকদের তরফ থেকে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, ‘রেসিডেন্ট চিকিৎসকরা ভেতর থেকে দরজা কেন পুরোপুরি বন্ধ করে দিলেন? পুলিশের আমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। কয়েকজন আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন। তবে রেসিডেন্ট চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না? ভিডিও করতে দেওয়া হবে না বলে দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কলেজে অ্যান্টি র‍্যাগিং কমিটি কোথায়? অ্যান্টি র‍্যাগিং স্কোয়াডও নেই? কেন সাসপেন্ড করা হল? কোন আইনে অন্তর্বর্তী সাসপেনশনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে? কেবলমাত্র বিরোধী পক্ষ বলেই কারোর বিরুদ্ধে এভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায় না’।

সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর হাইকোর্টের (Calcutta High Court) পর্যবেক্ষণ, ‘কলেজের তরফ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে এফআইআরের ভিত্তিতে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে এভাবে সাসপেন্ড করা যায় না। এখানে অতিসক্রিয়তা দেখানো হয়েছে’।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সাংবাদিকতা শুরু। বিগত ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত। রাজনীতি থেকে বিনোদন, ভাইরাল থেকে ভ্রমণ, সব ধরণের লেখাতেই সমান সাবলীল।

সম্পর্কিত খবর