বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রাজভবনের সামনেই ধর্না কেন? ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্তদের নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) ধর্নার আবেদন সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালতের পর্যবেক্ষণ, অন্য কেউ ভুল করলেই আগামী দিনে সেই একই ভুল অন্য কারও করার অধিকার জন্মায় না।
ভোট পরবর্তী হিংসায় জ্বলছে বাংলা। এই আবহে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাজভবনের সামনে ধর্নায় বসতে চেয়ে কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে চিঠি দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে সেই আবেদন খারিজ হয়ে যায়। এরপরই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু।
বিরোধী দলনেতার যুক্তি ছিল, যদি ১৪৪ ধারার কারণে বিজেপির আবেদন বাতিল হয় তাহলে গত বছর অক্টোবরে রাজভবনের সামনে তৃণমূল কীভাবে ধর্না আন্দোলন চালিয়েছিল? যদিও বিজেপির আবেদন খারিজ করে বিচারপতি অমৃতা সিনহা জানিয়ে দিয়েছেন ধর্নার জন্য অন্য কোনও বিকল্প জায়গা চিহ্নিত করতে হবে বিজেপিকে।
এই মামলাতেই বিচারপতি সিনহার নির্দেশ, গত বছর ৫ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর অনুমতিহীন ধর্নার জন্য পুলিশ কাদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ করেছে, আগামী শুক্রবার মামলার পরবর্তী শুনানিতে রাজ্যকে সেই ব্যাপারে তাদের বক্তব্য জানাতে হবে।
রাজ্যের আইনজীবিকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতি বলেন, ‘এটা কোনও দু’জন ব্যক্তির মধ্যে ঝগড়া নয়। দু’টো রাজনৈতিক দলের বিতর্ক। এটার প্রভাব নিয়ে ভেবে দেখেছেন? যে দল ওখানে ১৪৪ ধারা অমান্য করে ৫ দিন ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চালালো তাদের বিরুদ্ধে ঠিক কী পদক্ষেপ করেছে পুলিশ?’ রাজ্যের এজি অ্যাডভোকেটে জেনারেল কিশোর দত্তর উত্তর, ‘আমাকে একটু জেনে বলতে হবে।’
রাজ্যের যুক্তি, বর্তমানে সময় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বিজেপি ১৩ জুন ধর্নার অনুমতি চেয়েছিল। এর মাঝে রাজ্যপাল নিজে মাহেশ্বরী ভবনে গিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করেছেন। অনেকে রাজভবনে গিয়েও তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
আরও পড়ুন: হঠাৎ হাসপাতালে ছুটলেন মমতা, কী হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর?
আদালতে শুভেন্দুর আইনজীবীর বক্তব্য, ‘প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে পুলিশ আমাদের আবেদন বাতিল করে দিয়েছে। যদি ১৪৪ জন্য তা করা হয় তাহলে গত বছর তৃণমূলকে কেন অনুমতি দিয়েছিল পুলিশ?’ এরপই বিচারপতি বলেন, ‘একজন যদি ভুল করে বা যদি অন্যায়ভাবে কাউকে কিছু দেওয়া হয়, তার মানে এই নয় যে, অন্য কোনও ব্যক্তিরও তার উপর অধিকার জন্মায়।’ বিজেপিকে ধর্নার জন্য অন্য জায়গায় নির্বাচনের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।