বাংলা হান্ট ডেস্কঃ শিরোনামে হাওড়ার তৃণমূল (TMC) শিক্ষক নেতা শেখ সিরাজুল ইসলাম। দুর্নীতির অভিযোগে আগেই তাকে চাকরি বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। যদিও এদিন সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করে নেয় হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ। আপাতত তাকে সাসপেন্ড করার নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। কিন্তু তাতেও স্বস্তি ফিরল না। এবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর একক বেঞ্চে বিপাকে সিরাজুল।
কড়া ডোজ হাইকোর্টের- Calcutta High Court
ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ ছিল, যেহেতু এই মামলা এখনও হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর একক বেঞ্চে বিচারাধীন তাই আগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হচ্ছে। বলা হয়েছিল অভিযুক্ত শিক্ষককে বরখাস্ত করা হবে কী না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে হাইকোর্টের একক বেঞ্চই। এবার জাস্টিস বসুর এজলাসে মামলা উঠতেই প্রশ্ন, কেন অভিযোগ ওঠা সত্ত্বেও এতদিনে ওই শিক্ষকনেতা গ্রেফতার হল না?
CID- কে বিচারপতি বলেন, “উনিতো সেই নোবেল ব্যক্তি, ওঁর বেতন বন্ধ করুন। দু-তিন দিনের মধ্যে গ্রেফতার করুন।” বিচারপতি আরও বলেন, “ওঁকে ২০০১ সালেই জেলে ঢোকানো উচিৎ ছিল। এখনও তা হয়নি কেন? আপনাদের ওপর কোনও চাপ আছে নাকি?”
আদালতে সিআইডি জানায়, “আমরা নথি সংগ্রহ করছিলাম। তাই গ্রেফতার করা হয়নি। ক্ষোভ উগরে দিয়ে জাস্টিস বলেন, “কথা ঘোরানোর চেষ্টা করবেন না। একবার হাইকোর্টের নির্দেশ দিয়েছে। আর একবার কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে নিয়োগ বেয়াইনিভাবে হয়েছে। আর কী তথ্য চাই?”
এদিন ক্ষুব্ধ হয়ে বিচারপতি বলেন, আজই সিরাজুলকে গ্রেফতার করা সম্ভব কি না তা দেখুন। জবাবে সিআইডি বলেন, “আমরা চেষ্টা করব।” তবে বিচারপতি স্পষ্ট জানিয়ে দেন যদি অভিযুক্ত স্কুলে যদি যান তাহলে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে।
মূল ঘটনা: এই সিরাজুল ইসলাম হাওড়ার শিবপুরের একটি স্কুলের শিক্ষক। বাম আমলে তিনি জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। পরে অভিযোগ ওঠে, তিনি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে চাকরি পেয়েছেন। মামলা গড়ায় হাইকোর্টে। সেই সময়ই তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। তবে তাতে কোনো কাজই হয়নি।
অভিযোগ, আদালতের কড়া নির্দেশের পরও তিনি চাকরি চালিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি তৃণমূল আমলে তার রাজনৈতিক ক্ষমতা বেড়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে। এদিকে আবার এই অভিযুক্তকেই সম্প্রতি হাওড়া জেলায় তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষা সেলের সাধারণ সম্পাদক পদের বসানো হয়। জোরদার হয় বিতর্ক। ফের মামলা হয় হাইকোর্টে।

সেই মামলা ওঠে জাস্টিস বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গেল বেঞ্চে। আদালত অভিযুক্তর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দেয়। এদিকে তড়িঘড়ি ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিরাজুল। যাতে তার চাকরি নিয়ে টানাটানি না হয় সেই আর্জি জানান নেতা।
এদিকে ডিভিশন আর্জি খারিজ করে পাল্টা অভিযুক্তকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেয়। এবার একক বেঞ্চ আরও কঠোর নির্দেশ দিল এই মামলায়। আগামী ৯ এপ্রিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি।