CBI-র হাতে ২০২২ সালের ৫ মে মাসের চিঠি, কী ফাঁস হল তাতে? পার্থ নয় তখন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু…

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দীর্ঘ তিন মাসের শুনানির পর শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি মামলার (SSC Recruitment Corruption case) মোট ২৫৭৫৩ চাকরিপ্রার্থীর নিয়োগ বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি সব্বার রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে জানায়, সুপার নিউমারারি পদ বেআইনিভাবে গড়া হয়েছে। কী এই পদ? কোন সময়ে দুর্নীতি?

এসএসসিতে নিয়োগ করতে বেআইনি ভাবে অনেক অতিরিক্ত পদ (সুপারনিউমেরিক পদ) তৈরি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। এই সেই সব নিয়োগের অনুমোদন দিয়েছিল রাজ্য সরকারই। এদিন আদালতের নির্দেশ, এসএসসি সংক্রান্ত সমস্ত মামলার তদন্ত করবে সিবিআই (Central Bureau Of Investigation)। CBI তদন্ত করবে। যাকে প্রয়োজন তাকেই হেফাজতে নিতে পারবে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বেআইনিভাবে সুপার নিউমারারি পোস্ট করে চাকরি পাওয়াদের হেফাজতে নিতে পারবে সিবিআই।’

হাইকোর্টের সাফ নির্দেশ, সিবিআই রাজ্য সরকারের সঙ্গে যুক্ত সেই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও তদন্ত করবে, যারা অতিরিক্ত পদ তৈরির অনুমোদন দিয়েছিলেন এবং সেই সংক্রান্তি প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। প্রয়োজনে যে কাউকে হেফাজতে নিয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে সিবিআই। এদিন মামলার নির্দেশনামায় হাইকোর্ট জানিয়েছে, বিপুল নিয়োগ দুর্নীতির প্রকৃতি এবং ব্যাপ্তি জানতে, কারা এর সঙ্গে জড়িত তার তদন্ত হওয়া উচিৎ। যা করবে সিবিআই।

বিস্ময় প্রকাশ করে আদালতের মন্তব্য, ”এসএসসিতে বেআইনি চাকরি রক্ষা করতে রাজ্য সরকারের মন্ত্রিসভাও বিভিন্ন সময় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই নিয়োগগুলি সম্পূর্ণ বেআইনি, প্যানেলের বাইরে এবং প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে করা হয়েছে জেনেও দুর্নীতি করে পাওয়া চাকরি বাঁচাতে চেয়েছেন সরকারের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।” মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভাতেও বেআইনি চাকরি রক্ষার স্বার্থে সিদ্ধান্তগুলির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

যে সময়ে সুপার নিউমারারি পদ তৈরির জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে একটি চিঠি সিবিআই এর হাতে এসেছে তা ২০২২ সালের ৫ মে মাসের। প্রসঙ্গত, সেই সময় শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। ২০২১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল সরকার দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরেই ব্রাত্য বসুকে শিক্ষামন্ত্রী করা হয়। আর পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া হয় শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব। নবম-দশম, একাদশ-দ্বাদশ, গ্ৰুপ-সি, গ্ৰুপ-ডি সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০০ নিউমারারি পদ তৈরির জন্য মন্ত্রীসভাকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল।

mamata bratya hc

আরও পড়ুন: পার্থ চট্টোপাধ্যায়দের পাপের ফল ভুগতে হচ্ছে! SSC দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা হতেই বিস্ফোরক কুণাল ঘোষ

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের জুলাই মাসে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আর যে সময়ে মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সুপার নিউমারারি পদ তৈরির অনুমোদন দেওয়ার অভিযোগ, সেই সময়ে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন ব্রাত্য বসু। ফলত এবার এই সূত্র ধরেই তদন্ত করবে সিবিআই। এদিকে বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বলেন, ‘আমরা যেহেতু রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি, তাই এ বিষয়ে এখন আমি কিছু বলব না।’


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর