বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) চরম ভর্ৎসনার মুখে পড়লেন এক সরকারি আইনজীবী। তাঁর আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ভরা এজলাসে দেওয়া হল গ্রেপ্তারির হুঁশিয়ারি। আজ অর্থ্যাৎ সোমবার একটি মামলায়, বসিরহাট আদালতের অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটরকে তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন তিনি আদালতে হাজিরা দিতেই তাঁকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ।
হাইকোর্টে (Calcutta High Court) তীব্র ভর্ৎসনার মুখে সরকারি আইনজীবী
আদালত (Calcutta High Court) সূত্রে খবর, এক বিচারককে হেনস্থার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়েছিল ওই আইনজীবীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, আদালতের নির্দেশ থাকার পরেও ওই সরকারি আইনজীবী (অ্যাসিস্ট্যান্ট পাবলিক প্রসিকিউটর) একটি পকসো মামলায় নিম্ন আদালতে সওয়াল পর্বে উপস্থিত ছিলেন না। ওই মামলাতেই অভিযুক্ত সরকারি আইনজীবী কেন মামলায় হাজির থাকেননি, তা নিয়েই এদিন তাঁকে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হল। পকসো মামলায় ইতিমধ্যেই জামিন পেয়ে গিয়েছে অভিযুক্ত। এ কথা জানা মাত্রই মেজাজ হারান বিচারপতি। ক্ষুব্ধ হয়ে এদিন তিনি প্রশ্ন করেন, ‘সংবিধানের ধারা কি শুধু দোষীদের রক্ষাকবচ দিতে? নির্যাতিতার কী হবে তাহলে?’
গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় নামে ওই সরকারি আইনজীবীর আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে রীতিমতো ভর্ৎসনা করে বিচারপতি এদিন বললেন, ‘শেরিফ কে কি ডেকে পাঠাব? গ্রেফতার করতে বলব?’ এদিন অন্য একটি মামলার কথা উল্লেখ করে বিচারপতি জানান, সেখানেও নাকি আইনজীবীর অনুপস্থিতির সুযোগে একইভাবে ছাড় পেয়ে গিয়েছিল অভিযুক্ত। জাস্টিস বসাক এদিন সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখেন গত বছরের ২৮ নভেম্বরের পর ওই আইনজীবী নাকি আর আদালতে (Calcutta High Court) যাননি।
আরও পড়ুন: জঞ্জাল! ‘দুর্নীতিগ্রস্ত মানুষের লেকচার…,’ কার উপর চটলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়?
হাইকোর্টে (Calcutta High Court) বিচারপতি দেবাংশু বসাক এদিন স্পষ্ট জানান, ‘ওঁকে এপিপি হিসেবে রাখা যাবে না। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না। বসিরহাট আদালত চত্বরে প্রায় কয়েক একর জমি আছে। সেখানে আলাদা আদালত করার কথা ভাবা হচ্ছে। অথচ এমন এপিপি কোর্টে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন।’ প্রশ্ন উঠছে একজন আইনজীবী যিনি ৩০ বছর ধরে প্র্যাকটিস করছেন তিনি এমন কাজ কীভাবে করলেন? বর্ষীয়ান আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র এদিন বলেছেন, ‘সরকারি আইনজীবীকে মাফ করে দিন।’ আজ আদালতে এই মামলায় বিচারপতি বসাকের পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘নির্যাতিত শিশু উপযুক্ত বিচারপ্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে। আমাদেরও কোথাও উত্তর দিতে হয়।’
বসিরহাট আদালতে এক বিচারককে হেনস্থার অভিযোগকে কেন্দ্র করেই এই মামলার সূত্রপাত হয়। অভিযোগ ওঠে অ্যাডিশনাল ডিট্রিক্ট জাজকে হেনস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টে অভিযোগ জানান ওই বিচারক। বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। ওই ঘটনার ভিডিয়োগ্রাফি দেখে এক সরকারি আইনজীবী সহ ২১ জন আইনজীবীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ধারায় আদালত অবমাননার রুল জারি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকোর্ট। জানা যাচ্ছে আগামী ১৭ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।