বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আর জি কর (RG Kar) কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। দিকে দিকে প্রতিবাদ জানিয়ে গর্জে উঠছে সাধারণ মানুষ। গত ২৭ অগস্ট ‘ছাত্র সমাজের’ ডাকা নবান্ন অভিযনের (Nabanna Abhijan) আগের রাতে ছাত্রসমাজের ৪ প্রতিনিধিকে গ্রেফতার করেছিল গোলাবাড়ি থানার পুলিশ। অভিযোগ ছিল, হাওড়া স্টেশনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি, গোলমাল করার চেষ্টা চলছে এবং খুনের চেষ্টার ছক করা হচ্ছিল। তাই গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ওই চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। যদিও সেদিনই বিকেলে বেলুড় থানা থেকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এবার কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) সেই গ্রেফতারি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।
কীসের ভিত্তিতে গ্রেফতার? মুক্তিই বা কেন? প্রশ্ন হাইকোর্টের
এদিন কলকাতা হাইকোর্টে মামলা উঠলে বিচারপতি রাজর্ষী ভরদ্বাজের প্রশ্ন, ‘খুনের চেষ্টার ষড়যন্ত্রেই গ্রেফতার হলে ২৪ ঘন্টায় ছেড়ে দেওয়া হল কেন? এত জঘন্যতম অপরাধের ভিত্তিতে এমন পদক্ষেপ কেন পুলিশের?’ প্রসঙ্গত, পুলিশ জানায় ২৬ আগস্ট রাত ৯ :৫৫ টা নাগাদ তারা জানতে পারেন যে ওই ৪জন কোনো অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।
সেই তথ্যের ভিত্তিত্র গত ২৭ অগাস্ট রাত ১২:০৫ নাগাদ গ্রেফতার করা হয় ওই চার যুবককে। এখানেই বিচারপতির প্রশ্ন, “কীসের ভিত্তিতে ওদের গ্রেফতার করল পুলিশ? আর যদি গ্রেফতার করেইছে তাহলে কীসের ভিত্তিতেই বা ছেড়ে দিল?’ ‘যদি এভাবেই চলতে থাকে তাহলে তো পুলিশ যাকে যখন খুশি গ্রেফতার করবে আর ২৪ ঘণ্টা পরে ছেড়ে দেবে!” ভরা এজলাসে মন্তব্য বিচারপতির।
“আইন রক্ষার দায়িত্বে পুলিশ আছে মানেই তারা বেআইনি কাজ করবে এমন হতে পারে না”। বললেন বিচারপতি। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, “পুলিশের কাছে গোপন সূত্রে খবর ছিল যে এরা গণ্ডগোল পাকানোর চেষ্টা করছে। তাই প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়।” বিচারপতির পাল্টা প্রশ্ন, “ঠিক কী অভিযোগ পেয়েছিল পুলিশ?কোথা থেকে এদের বিরুদ্ধে তথ্য পেল? আগেও কী এদের বিরুদ্ধে কোনও অপরাধের নিদর্শন আছে?” প্রশ্ন বিচারপতির।
আরও পড়ুন: আরজি কর কাণ্ডে শিরোনামে অভীক দে! কে এই ব্যক্তি? আসল পরিচয় মাথা ঘুরিয়ে দেবে
আদালতের পর্যবেক্ষণ, গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ যখন ওই ছাত্র প্রতিনিধিদের গ্রেফতারই করল তখন একদিন পর ছেড়ে দিল কেন? যদি এদের সম্পর্কে যদি গুরুতর অভিযোগ থাকে তাহলে কেন পুলিশ তাদের মুক্তি দিল। আর যদি পুলিশের কাছে তথ্য বিশ্বাসযোগ্য না হয়, তাহলে ২৪ ঘণ্টা তাদের আটকে রাখারই বা কী প্রয়োজনীয়তা ছিল? এরপরই এই নিয়ে কেস ডায়েরি সহ যাবতীয় নথি তলব করেছেন জাস্টিস ভরদ্বাজ। আগামীকাল এই মামলা ফের শুনবেন বিচারপতি।