বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সেক্সটরশনের বলি এক চিকিৎসক। ঘটনাটি ঘটেছে ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এবার এই মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়ল CID। মৃত চিকিৎসকের সুইসাইড নোট এবং তাঁর পরিবারের দায়ের করা FIR-এ অভিযুক্ত হিসেবে উক্ত মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপাল এবং একজন মহিলা সাব ইনস্পেক্টরের নাম ছিল। তবে আলিপুর আদালতে CID যখন চার্জশিট জমা দেয়, তখন দেখা যায় ওই দুই অভিযুক্তের নাম সেখানে নেই।
এই ঘটনাতেই বাঁধে গোলযোগ! তদন্তকারী সংস্থা গোপনীয়তা এবং চুপিসারে কাজ করেছে, এমন গুরুতর অভিযোগ ওঠে। সম্প্রতি ওই মামলার অন্যতম মূল অভিযুক্ত রিয়া দাসের পিতা তাপস খান উচ্চ আদালতে আগাম জামিনের আর্জি জানান। তবে সেই আর্জি খারিজ করে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চে ওই জামিন মামলার শুনানি ছিল। সেই শুনানি চলাকালীন ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত। ওই মামলার তদন্তে ফাঁকফোকর আছে দেখে CID-কে তীব্র ভর্ৎসনা করে আদালত। এরপর CID-র এডিজিকে আদালত বলেন, দরকার হলে উনি পুনরায় ওই ঘটনার তদন্তের বিষয়টি বিবেচনা করছেন। দরকার পড়লে বর্তমানে যে অফিসার তদন্ত করছেন (আইও), তাঁকে সরিয়ে ওই জায়গায় নতুন তদন্তকারী অফিসার (আইও) নিয়োগ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ মন্ত্রী অরূপ রায়ের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করতেই গ্রেফতার, তৃণমূল কর্মীর সঙ্গে যা হল…
এই নির্দেশের পাশাপাশি এদিন তাপসের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে হাই কোর্ট বলে, যেহেতু মৃতের কন্যা এবং অন্যান্য সাক্ষীরা মামলার মূল দুই অভিযুক্ত রিয়া দাস এবং অভিজিৎ দাসের পাশাপাশি আবেদনকারী তাপস খানের ভূমিকা নিয়ে মামলার তদন্তে বয়ান দিয়েছেন। সেই কারণে তাঁর আগাম জামিনের আবেদন এই মুহূর্তে মঞ্জুর করা যাবে না। এর আগে মাস দেড়েক আগে আলিপুর আদালতেও আগাম জামিনের আবেদন করেছিলেন তাপস। তবে সেবারও কোনও সুরাহা হয়নি।
উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ ডায়মন্ড হারবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (Diamond Harbour Medical College Hospital) আবাসন থেকে ওই চিকিৎসকের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। এরপর রিয়া এবং অভিজিৎকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গত সপ্তাহে নিম্ন আদালত রিয়াকে জামিন দিয়েছে। এদিকে CID-র চার্জশিটে দাবি করা হয়েছে, মৃত চিকিৎসককে ফাঁদে ফেলে তাঁর থেকে লক্ষাধিক টাকা হাতানো হয়েছিল। সেক্সটরশনের বলি হয়েছিলেন তিনি।
এদিন নথি দেখার পর হাই কোর্ট জানতে চায়, উক্ত মেডিক্যাল কলেজের প্রিন্সিপালের নাম মৃত চিকিৎসকের সুইসাইড নোটে থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও রকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি? এই প্রশ্নের কোনও সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি তদন্তকারী অফিসাররা। এরপরেই CID-র এডিজিকে বিরাট নির্দেশ দেয় আদালত।