বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সাম্প্রতিক অতীতে একাধিক মামলায় উল্লেখযোগ্য রায় দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। সেসব নিয়ে বিস্তর চর্চাও হয়েছে। এবার যেমন বাংলার এক সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকের দায়ের করা মামলায় বিরাট পর্যবেক্ষণ দিল আদালত। কোনও কর্মচারী যখন নিজের কর্মজীবনে সকল দায়িত্ব ঠিকঠাকভাবে পালন করার পর অবসর গ্রহণ করেন, তখন পেনশন এবং গ্রাচুয়িটি তাঁর বিধিবদ্ধ অধিকার। সম্প্রতি এমনই পর্যবেক্ষণ দিলেন হাই কোর্টের বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়।
হাই কোর্টে এই মামলা দায়ের করেছিলেন কুণালচন্দ্র সেন নামে রাজ্যের এক অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক (Retired School Teacher)। সেই মামলার প্রেক্ষিতেই এই পর্যবেক্ষণ দিল আদালত। ২০০৪ সালে চন্দননগর বঙ্গ বিদ্যালয়ে অস্থায়ী হেড মাস্টার হিসেবে যোগ দেন কুণালচন্দ্রবাবু। পরের বছরই পার্মানেন্ট হন তিনি।
প্রায় এক দশক ওই বিদ্যালয়ে চাকরি করার পর ২০১৫ সালের জুলাই কুণালচন্দ্র সেন অবসর নেন। ওই বছরই তিনি পেনশন ও গ্র্যাচুয়িটির (Pension and Gratuity Case) দাবি জানিয়ে কাগজপত্র জমা করেন। তবে সেই টাকা আটকে দেওয়া হয়। সৌজন্যে এক বিধায়কের আনা অভিযোগ। ওই বিধায়ক অভিযোগ করেছিলেন, কুণালচন্দ্রবাবু বিদ্যালয়ের টাকা নয়ছয় করেছেন। এই কারণেই তাঁর পেনশন এবং গ্র্যাচুয়িটির টাকাও আটকে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুনঃ ‘কীভাবে ওই টাকা…’! নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বেজায় ক্ষুব্ধ হাই কোর্ট, ED-কে চরম নির্দেশ জাস্টিস সিনহার!
যদিও ওই বিধায়কের আনা অভিযোগের কোনও সত্যতা মেলেনি বলে খবর। পরবর্তীতে কুণালচন্দ্রবাবু মামলা করায় তাঁর প্রভিশনাল পেনশহন চালু করা হয়। সেই সঙ্গেই আদালতের তরফ থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সি CBI-কে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। তদন্তকারী সংস্থা জানায়, ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে করা হয়েছে, এর সঙ্গে পেনশন কিংবা গ্র্যাচুয়িটির কোনও যোগ নেই।
এবার হাই কোর্টের তরফ থেকে স্পষ্ট জানানো হল, কর্মজীবনের সকল দায়িত্ব সুষ্টূভাবে সম্পাদন করার পর পেনশন এবং গ্র্যাচুয়িটি একজন কর্মীর বিধিবদ্ধ অধিকারের মধ্যে পড়ে। এহেন অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে তা আটকে রাখা যায় না। এর আগে হাই কোর্টের তরফ থেকে ট্রেজারিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে ২৮ লাখ ৬৭ হাজার টাকা জমা রাখতে হবে। এই টাকা হল কুণালচন্দ্রবাবুর প্রাপ্য টাকা। এবার উচ্চ আদালতের রায়, মামলাকারী যে বছর অবসর নিয়েছেন তথা ২০১৫ সাল থেকে ৮% হারে এই টাকা তাঁকে ফেরত দিতে হবে।