রাজ্যের সরকারি চাকরিতে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য সংরক্ষণ! কত শতাংশ আসন? বিরাট নির্দেশ হাই কোর্টের

   

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃতীয় লিঙ্গ মানেই লাঞ্ছনা, গঞ্জনার শিকার! পড়াশোনা থেকে শুরু করে চাকরি, প্রায় সব ক্ষেত্রেই কমবেশি জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় তাঁদের অনেককে। বহুসময় দেখা যায়, যোগ্যতা থাকলেও চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে এই প্রার্থীদের। এবার তাই তাঁদের পক্ষে বিরাট নির্দেশ দিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)।

প্রাথমিক শিক্ষকতার এক চাকরিপ্রার্থী তৃতীয় লিঙ্গের (Transgender Candidate) একজন নাগরিক একটি মামলা করেছিলেন। সেই মামলার সূত্রেই সম্প্রতি বিরাট নির্দেশ দেন হাই কোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থা (Justice Rajasekhar Mantha)। রাজ্য সরকারের সকল চাকরিতে এবার তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থীদের জন্য ১% সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। এই বিষয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার রাজ্যের সরকারি চাকরিতে (State Government Jobs) তৃতীয় লিঙ্গের জন্য সংরক্ষণ এই নির্দেশ দেন জাস্টিস মান্থা। এর ফলে আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, এর ফলে বাংলার বুকে প্রথমবার সুপ্রিম কোর্টের নালসা রায় কার্যকর হওয়ার একটা সুযোগ তৈরি হল।

আরও পড়ুনঃ একদিনের পরীক্ষায় উড়েছে কয়েক হাজার কোটি! NEET দুর্নীতির অঙ্কটা কত? শুনলে আঁতকে উঠবেন!

হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারী ২০১৪ এবং ২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় সফল হলেও শুধুমাত্র  তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী হওয়ার কারণে লাঞ্ছনা, গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছে। তাই এবার উচ্চ আদালত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবকে গত শুক্রবারের নির্দেশের কপি হাতে পেয়েই মামলাকারীর জন্য ইন্টারভিউ ও কাউন্সেলিংয়ের বন্দোবস্ত করতে বলেছে। আগামীদিনে তৈরি হওয়া এমন শূন্যপদে যাতে তাঁর নিয়োগ সম্ভবপর হয়।

মেদিনীপুর নিবাসী ছেলেটি একসময় আচমকাই নিজেকে মেয়ে মনে করতে শুরু করেন। এই পরিবর্তনের জেরে পরিবার এবং প্রতিবেশীদের থেকে জোটে লাঞ্ছনা এবং গঞ্জনা। শেষমেশ বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এই পরিস্থিতির মধ্যেও অবশ্য পড়াশোনা বন্ধ করেননি। স্নাতক, ডিএলএড পাশ করেন তিনি। বেলঘরিয়ায় থাকতে শুরু করেন। তবে একটা সময় টাকার সংকট চরমে ওঠে। পেট চালাতে সিগন্যালে ভিক্ষাবৃত্তিও করেছেন তিনি।

Calcutta High Court

এর মধ্যেই ২০১৪ এবং ২০২২ সালের টেট পরীক্ষায় পাশ করেন। হাই কোর্টে তাঁর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় জানান, তাঁর মক্কেলকে ইন্টারভিউতেও ডাকা হয়েছিল। তবে সেখান থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে তাঁকে। চাকরি পাওয়া তো দূর, উল্টে তাঁকে নিয়ে হাসিঠাট্টা করা হতো। এরপরেই মামলার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এবার সেই মামলাতেই সংরক্ষণের বিরাট নির্দেশ দিলেন জাস্টিস মান্থা। এর ফলে বাংলার অনেক তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকের বঞ্চনা দূর হবে বলে মনে করছেন তৃতীয় লিঙ্গের নাগরিকদের আইনি সহায়তা প্রদান করা হাই কোর্টের আইনজীবী কৌশিক গুপ্ত।

Sneha Paul
Sneha Paul

স্নেহা পাল, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তরের পর সাংবাদিকতা শুরু। বিগত প্রায় ২ বছর ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর