বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের গৃহশিক্ষকতায় (Private Tuition) আগেই লাগাম দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। তবে আদালতের কড়া নির্দেশের পরও সুরাহা হয়নি। রাজ্যের স্কুল-শিক্ষকদের (School Teachers) প্রাইভেট টিউশন নিয়ে বহুদিন ধরেই সমস্যা সামনে এসেছে। বারেবারে তোলা হয়েছে অভিযোগ। এবার এই ইস্যুতেই কড়া অবস্থান কলকাতা হাইকোর্টের ( Calcutta High Court)।
রাজ্যের স্কুল-শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন নিয়ে আপত্তির ভিত্তিতে তা নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্টের নির্দেশ জারি ছিল। একজন সরকারি শিক্ষক বা শিক্ষিকা (Government Teacher) মুচলেকা দিয়ে বেতন নেওয়ার পর কীভাবে গৃহশিক্ষকতা চালিয়ে যাচ্ছেন? স্কুল শিক্ষকরা যে প্রাইভেট টিউশন করাতে পারবেন না আগেই এই নির্দেশ ছিল কলকাতা হাইকোর্টের। তবে অভিযোগ উচ্চ আদালতের নির্দেশের অবস্থা সেই রকমই রয়েছে।
সম্প্রতি শিক্ষকদের সংগঠন গৃহ শিক্ষক কল্যাণ সমিতির করা মামলার ভিত্তিতে রাজ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও জেলা স্কুল পরিদর্শককে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছে হাইকোর্ট। রাজ্য সরকারকে আট সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে। তবে এরপরও যদি রাজ্য কোনও পদক্ষেপ না করে, তাহলে এবার দল বেঁধে আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে গৃহশিক্ষদের সংগঠন।
শিক্ষকদের সংগঠন গৃহ শিক্ষক কল্যাণ সমিতির করা মামলায় হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। কলকাতার হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণের পর ইতিমধ্যেই প্রাথমিক আলোচনা সেরেছেন শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকরাও। যা থেকে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে।
একদিকে আদালতের রায়ে দিশেহারা শিক্ষা দপ্তর। অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে বহু অভিভাবকদের আদালতের এই নির্দেশ নিয়ে সায় নেই। অর্থাৎ তারা চাইছেন স্কুল শিক্ষকরা যেভাবে টিউশন পড়াচ্ছে সেই বিষয়টি তেমনই চলুক। এই বিষয়ে শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের প্রশ্ন, ‘প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফে যে সব প্রমাণ দেওয়া হয়েছে, তার তদন্ত করবে কে? কারণ স্কুলশিক্ষা কমিশনার, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং বিদ্যালয় পরিদর্শকদের (ডিআই) এরা কেউই কোনও তদন্তকারী সংস্থা নয় বলেই দাবি তাদের।
এক্ষেত্রে প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গেলে সমস্যা বাড়তে পারে বলে মনে করছে শিক্ষা দপ্তর। তাছাড়া তদন্ত করতে গেলে স্কুলশিক্ষা কমিশনার, পর্ষদ এবং ডিআই অফিসের আধিকারিকরা শুধুমাত্র ক্লাস চলাকালীন সময়েই স্কুল পরিদর্শনে যেতে পারবেন। তার আগে ও পরের সময় নিয়ে তারা কোন আইনে তদন্ত করবেন সেই নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: সংসদ কাণ্ডের পর এবার ভোটেও ধাক্কা খাবেন মহুয়া মৈত্র? কী বলছে বুথ ফেরত সমীক্ষা?
শিক্ষা দপ্তরের আধিকারিকদের মতে এক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসন বা কোনও তদন্তকারী সংস্থাকে দায়িত্ব দিতে হবে আদালতকে। এপ্রসঙ্গে মামলাকারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর দাস বলেছেন , ‘কলকাতা হাইকোর্ট কমিশনার, পর্ষদ এবং বিদ্যালয় পরিদর্শকদ অর্থাৎ ডিআইদের ৮ সপ্তাহে চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছে। ওরা সেই কাজ করতে না পারলে কর্মরত শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধে এজেন্সি নিয়োগ করার দাবি জানাব।’